পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০২
প্রাকৃতিকী

ব্যবহারাদি সম্বন্ধে নানা কথা বলিতে লাগিলেন। সেদিন বিমর্ষতার মাত্রাটা কিছু অধিক দেখিয়া প্রসঙ্গক্রমে তাঁহার এই হঠাৎ পরিবর্ত্তনের কথা জিজ্ঞাসা করায়, বন্ধুবর স্পষ্টই বলিলেন, “শুক্রের উভয়াংশে যাহা কিছু জ্ঞাতব্য বিষয় ছিল সকলই জানা গিয়াছে—শুক্রের তামসাচ্ছন্ন মহা প্রান্তর পরিভ্রমণকালে যে উৎসাহ ছিল তাহা আর কিছুই নাই, এখন যেন একটা ভয়ানক নিরুদ্যম ও অবসাদ আসিয়া হৃদয় আচ্ছন্ন করিয়াছে এবং সকলই যেন ঘোর নিরানন্দময় ও একঘেয়ে বলিয়া বোধ হইতেছে—”। বন্ধুর কথা শেষ না হইতে, কাম্‌রার বাহিরে এক মহা কোলাহল শুনা গেল, যেন কয়েকজন লোকে উচ্চৈঃস্বরে পরস্পর বিবাদ করিতেছে বলিয়া বোধ হইল। ব্যাপারটা কি দেখিবার জন্য কৌতূহলাবিষ্ট হইয়া চক্ষু খুলিয়া যেমন উঠিয়াছি, দেখিলাম আমার সেই ক্ষুদ্র বৈঠকখানা ঘরের কৌচের নিকট দাঁড়াইয়া রহিয়াছি! বুঝিলাম, আমি এ পর্য্যন্ত কৌচেই শায়িত ছিলাম; নীচের ঘরে আমার এক উড়িয়া বেহারার সহিত এক দেশীয় ভৃত্যের মহা ঝগড়া আরম্ভ হইয়াছে। উভয়েই যথাসাধ্য চীৎকার করিতেছে। যদিও উভয় ভৃত্যই এক নির্দ্দিষ্ট হারে বেতন পাইত, তথাপি প্রাধান্য লইয়া তাহাদের মধ্যে প্রায়ই বিবাদ হইত, এবং প্রত্যেকে অপরের উপর যথাসাধ্য প্রভুত্বস্থাপনের প্রয়াস পাইত; আজও যে সেই পুরাতন প্রাধান্য-প্রশ্নের মীমাংসার জন্য এই গোলযোগ, এবং এই গোলযোগই যে আমার সুখস্বপ্ন ভঙ্গের কারণ তাহা বুঝিতে পারিলাম। তথম রাত্রি আট্‌টা বাজিয়া গিয়াছে। ঘরের মেজের উপর মিট্ মিট্ করিয়া সেজ জ্বলিতেছিল। বন্ধুর অনুসন্ধানে পার্শ্বে দৃষ্টিপাত করিয়া দেখিলাম, তাঁহার অধিকৃত কেদারা খানি শূন্য পড়িয়া রহিয়াছে। স্বপ্নদর্শনকালে বন্ধু কি প্রকার অবস্থায় ছিলেন জানিবার জন্য অত্যন্ত উৎসুক হইলাম, বিলম্ব না করিয়া তাঁহার বাড়ী গেলাম। দেখিলাম বন্ধু বড় ব্যস্ত এবং তাঁহার স্বভাবগম্ভীর মুখমণ্ডল