পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
প্রাকৃতিকী

আহরণ করিয়া দেহে সঞ্চিত রাখিয়াছিল। কাজেই কয়লার শক্তিকে সৌরশক্তিরই রূপান্তর বলিতে হয়। যে জলপ্রপাতকে শৃঙ্খলিত করিয়া আজকাল নানা কাজ করাইয়া লওয়া হইতেছে, অনুসন্ধান করিলে দেখা যায়, তাহাদের শক্তিও সৌরশক্তি। পর্ব্বত-চূড়ায় জলের সঞ্চয় সূর্যতাপেরই কাজ! জলই সেই সৌরশক্তিকে বক্ষে ধরিয়া রাখে এবং তার পরে নীচে নামিবার সময় তাহার বিকাশ দেখায়। বুদ্ধিমান মানুষ এই সুযোগ ছাড়িতে চায় না, নিম্নগামী জলের প্রবাহ দ্বারা চাকা ঘুরাইয়া অনেক কাজ করাইয়া লয়।

 কয়লায় যে শক্তি সঞ্চিত থাকে, পোড়াইলেই তাহা তাপালোকে পরিণত হইয়া ক্ষয়প্রাপ্ত হইতে থাকে। ক্ষয়ের সময় ষোন আনা শক্তিকেই যদি আমরা কাজে লাগাইতে পারি, তাহা হইলেই আমাদের লাভ হয়, কিন্তু অতি উৎকৃষ্ট যন্ত্রেও কয়লা পোড়াইলে সমগ্র শক্তিকে আমরা কাজে লাগাইতে পারি না; অধিকাংশই বৃথা তাপালোক উৎপন্ন করিয়া এবং পার্শ্বের জলস্থলবায়ুকে অনাবশ্যক গরম করিয়া নিয়তই নষ্ট হয়। হিসাব করিলে দেখা যায়, এই অপব্যয়ের পরিমাণ শতকরা ৮৫ ভাগ। অর্থাৎ এক শত ভাগ শক্তির মধ্যে কেবল ১৫ ভাগ মাত্র কল চালায়। এই অপচয় বড় অল্প নয়। দীর্ঘকাল এ প্রকার বাজে খরচের প্রশ্রয় দিতে থাকিলে, কয়লার অভাবে কলকারখানা বন্ধ হইবার যথেষ্ট আশঙ্কা আছে। এই সকল কারণে বিজ্ঞানসম্মত প্রথায় কয়লা পোড়াইয়া তাহার অধিকাংশ শক্তিকে কাজে লাগাইবার জন্য আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ যথেষ্ট চেষ্টা করিতেছেন। গত কয়েক বৎসরের রসায়ন শাস্ত্রের ইতিহাস অনুসন্ধান করিলে দেখা যায়, ইঁহারা উদ্দেশ্য-সিদ্ধির পথে যেন কতকটা অগ্রসর হইয়াছেন। সাধারণ চুল্লীতে পোড়াইলে কয়লা হইতে যে কতকগুলি অনাবশ্যক বাষ্প উৎপন্ন হয়, তাহাই শক্তিকে ক্ষয় করায়। আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ