পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
প্রাকৃতিকী

বলিয়া স্থির করেন, এবং অল্পায়াসেই থ্যালিয়ম নামক একটি নূতন ধাতু আবিষ্কৃত হইয়া পড়ে। বর্ণচ্ছত্র দ্বারা ধাতুআবিষ্কারে বুন্‌সেন্ ও ক্রুক্‌স্ প্রমুখ পণ্ডিতগণের কৃতকার্য্যতা দেখিয়া তাৎকালিক অনেক পণ্ডিত সকল পদার্থেরই বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষা করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। ইহার ফলে রয়স্‌বাদ্রোঁ ও ফ্রেনবর্গ নামক বৈজ্ঞানিকদ্বয় অল্পকাল মধ্যেই ইণ্ডিয়ম্ ও গ্যালিয়ম্ নামে অপর দুইটি নূতন ধাতু আবিষ্কার করেন।

 প্রত্যেক পদার্থের বর্ণচ্ছত্রস্থ নির্দ্দিষ্ট বর্ণের স্থির রেখাগুলিই, এই নূতন বিশ্লেষণ প্রথার প্রধান অবলম্বন। পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে— পদার্থ পরিবর্ত্তন না করিলে, বর্ণচ্ছত্রে নির্দ্দিষ্ট বর্ণরেখাগুলির স্থান সকল সময়েই এক থাকে। এখন ইহা হইতে স্পষ্টই প্রতীয়মান হইতেছে, কোন এক জটিল যৌগিকের উপাদান স্থির করিতে হইলে, বর্ণচ্ছত্র রচনা করিয়া ইহার কোন্ কোন্ বর্ণরেখা মৌলিক বর্ণচ্ছত্রস্থ রেখার অনুরূপ, সর্ব্ব প্রথমে তাহা নির্ণয় করা আবশ্যক। কারণ, তাহা স্থির করিতে পারিলে, তত্তৎ বর্ণরেখা উৎপাদক মৌলিক পদার্থ যে, উক্ত যৌগিকে বর্ত্তমান আছে, তাহা অনায়াসেই স্থির করা যায়। কোন্ মৌলিক পদার্থ কোন্ বর্ণরেখা প্রকাশ করে তাহা নানা পদার্থের রঞ্জিত প্রতিকৃতি দেখিয়া অনায়াসে জানিতে পারা যায়। আজকাল সাধারণ বিশ্লেষণকার্য্য এই প্রকারে সম্পন্ন হইয়া থাকে।

 বর্ণচ্ছত্রস্থ বর্ণরেখাগুলির স্থান যে, সকল সময়েই নির্দ্দিষ্ট থাকে তাহাতে আর সন্দেহ নাই। কিন্তু আলোকজনক পদার্থের অবস্থাভেদে, অনেক সময় রেখাগুলি কখন ক্ষীণতর কখন বা প্রশস্ততর হইতে দেখা যায়। পরীক্ষা দ্বারা দেখা গিয়াছে, আলোকোৎপাদক পদার্থের চাপ ও তাপ বৃদ্ধি করিলে ইহার পরিচায়ক বর্ণরেখাগুলি ক্রমেই উজ্জ্বল ও প্রশস্ততর হইতে দেখা যায় এবং তাপ পরিমাণ অত্যন্ত বৃদ্ধি করিলে, বর্ণচ্ছত্রে কখন কখন একই