পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অদৃশ্য কিরণ

জ্বলন্ত কঠিন ও তরল পদার্থজাত বর্ণচ্ছত্র প্রায়ই অবিচ্ছিন্ন হইতে দেয়া যায়; সৌরবর্ণচ্ছত্রের কৃষ্ণরেখা বা বাষ্পীয় বর্ণচ্ছত্রের স্থূলোজ্জ্বল রেখা ইহাতে থাকে না।[১] এই অবিচ্ছিন্ন বর্ণচ্ছত্রে লোহিত হইতে ভায়লেট্ পর্য্যন্ত সকল বর্ণেরই পূর্ণ বিকাশ প্রত্যক্ষ হয়;—কিন্তু এই সুবিন্যস্ত প্রশস্ত বর্ণচ্ছত্রেও আমরা সকল বর্ণ দেখিতে পাই না। জ্বলন্ত পদার্থজাত আলোক-তরঙ্গ দ্বারা যে সকল বর্ণ উৎপন্ন হয়, মানবচক্ষু তাহার সকলগুলি দেখিতে পায় না,—অনম্ভ আকাশব্যাপী অনন্ত-তরঙ্গের প্রত্যেক প্রকার হিল্লোল লক্ষ্য করা, সসীম মানব দৃষ্টির সম্পূর্ণ অসাধ্য ব্যাপার; তাই আমরা অনতিবিস্তৃত সাধারণ বর্ণচ্ছত্রে কেবল লোহিত হইতে ভায়লেট্ পর্য্যন্ত কয়েকটি বর্ণ দেখিয়া থাকি। লোহিত বর্ণোৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষা বৃহত্তর তরঙ্গ দ্বারা যে বর্ণ উৎপন্ন হয়, তাহা ক্ষুদ্রদৃষ্টি মানব কিছুতেই দেখিতে পায় না, এবং ভায়লেট্ উৎপাদক তরঙ্গ অপেক্ষা সূক্ষ্মতর কম্পন দ্বারা যে সকল বর্ণ বিকশিত হয়, তাহাও মানব-ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য হয় না। মানব-ইন্দ্রিয়াদির হীনতার ইহাই একমাত্র উদাহরণ নয়,—চক্ষুর ন্যায় আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয়েরও শক্তির একটা সীমা আছে। পাঠকপাঠিকাগণ বোধ হয় জানেন, বায়ুরাশি কোন প্রকারে আন্দোলিত হইয়া কম্পিত হইলে শব্দ উৎপন্ন হইয়া থাকে। এই কম্পন সংখ্যা যত অধিক হইবে, শব্দও তত চড়িতে থাকিবে। পরীক্ষা দ্বারা দেখা


  1. বর্ণচ্ছত্রের বিশেষ বিবরণ “বর্ণচ্ছত্র” ও “বিশ্লেষণ প্রথা” প্রবন্ধ দ্বয়ে দ্রষ্টব্য।