পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূমিকম্প
৭৭

মত এই যে, ভূগর্ভস্থ সমগ্র গলিত পদার্থ শীতল হইয়া জমাট বাঁধিয়া গেলেও, ভূগর্ভের আকুঞ্চন রোধ পাইবে না। তখন পৃথিবীর ভিতরে বৃহৎ বৃহৎ গহ্বরের সৃষ্টি হইতে থাকিবে এবং সময়ে সময়ে উপরকার মাটি পাথর ভাঙ্গিয়া পড়িয়া সেই সকল গহ্বর পূর্ণ করিতে থাকিবে। কাজেই এই প্রকার ভাঙ্গাচোরার দ্বারা পৃথিবীতে ভূমিকম্প পূর্ণমাত্রাতেই চলিতে থাকিবে।

 ভূপৃষ্ঠের মাটি ভাঙ্গিয়া পড়িয়া ভূগর্ভস্থ গহ্বর পূর্ণ করিতে থাকিলে যে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়, কয়েকটি আধুনিক ভূমিকম্পের কার্য্য আলোচনা করিলে, আমরা তাহা বেশ বুঝিতে পারি। সুমাত্রা দ্বীপে যে বৃহৎ ভূমিকম্প হইয়া গিয়াছে, তাহাতে ভূপৃষ্ঠ অনেকটা নীচু হইয়া একটি শহরের কতক অংশকে প্রায় সমুদ্রতলশায়ী করিয়াছে। গত ১৮৯৭ সালের বাঙ্গালা দেশের বৃহৎ ভূমিকম্পের কথা পাঠকের অবশ্যই স্মরণ আছে। ইহাতেও উত্তর বঙ্গের অনেক স্থানকে উঁচুনীচু হইতে দেখা গিয়াছে। সম্প্রতি জাপানে যে এক ভূমিকম্প হইয়াছে, তাহাতে তথাকার একটি স্থান প্রায় ২০ ফুট নীচু হইয়া গিয়াছে। সুতরাং ভূমিকম্পের উৎপত্তি সম্বন্ধে লর্ড কেল্‌ভিনের বর্ত্তমান সিদ্ধান্তটি যে অভ্রান্ত তাহাতে সন্দেহ নাই।