পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন বাঙ্গল সাহিত্যে মুসলমানের অবদান ులసి লাখ পুরুষ মহে লোরক স্বরূপ । কোথায় গোময়-কীট, কোথায় মধুপ ॥” বৃন্দাবনের কিশোর-কিশোরীর চরণের রুমুঝুমু এইভাবে কর্ণফুলির উপান্তভাগে মগের-রাজ্যে শুনিয়া আমাদের মনে অনাবিল একটা আনন্দ হয় যে, যে-সকল মুখ্য-প্রভাবে বাঙ্গলা সাহিত্য গড়িয়া উঠিয়াছে—মুদূর পূৰ্ব্বের বঙ্গসাহিত্যও তাহা হইতে বঞ্চিত হয় নাই। ইউসুফ ও জোলেখা’ নামক কাব্য সম্প্রতি আবিষ্কৃত হইয়াছে। যে কয়েকখানি পুথি পাওয়া গিয়াছে, তাহার প্রাচীনতমখানি ১৭৩২ খৃঃ অবো লিখিত । ইহাতে মগী সন ১৩৯৪ দেওয়া হইয়াছে। তাহাতে বইখানি যে আরাকান রাজ্যের প্রভাবান্বিত তাহা অনুমান করা যায়। কবি শাহ, মোহাম্মদ সগীরের লেখায় চণ্ডীদাসের 'কৃষ্ণকীৰ্ত্তন'-এর প্রভাব স্পষ্ট । র্তাহার—“প্রথম বরিখ স্বপ্ন দেখাইল ছল।”—প্রভৃতি স্বপ্ন-বুজ্ঞান্তের ভাব ও ভাষা চণ্ডীদাসের—“দেখিলে। প্রথম নিশি, স্বপন শুনতে বসি ।” প্রভৃতি পদের অনুরূপ। “শুন শুন সখি, যার তরে হইলু দুখী, প্রাণের সখি ল।”—প্রভৃতি পদটি ‘কৃষ্ণকীর্তন’কে স্মরণ করাইয় দেয়। সুতরাং বৈষ্ণব কবিগণের পদ-লহরী য়ে আরাকান-সীমায় বহুলব্ধপ পঠিত হইত, তাহার নিদর্শন আছে। এ বাঙ্গালী যে যে-যেখানে যাইয়া তাহার মাতৃভাষার শ্ৰীবৃদ্ধি করিয়াছে, আমরা তাহার প্রতি প্রীতি নিবেদন করিতেছি। বৌদ্ধ পাল-রাজাদের রাজত্ব-কালে বাঙ্গলা ভাষার প্রভাব দূর-দূরান্তরে চড়াইয়া পড়িয়াছিল এবং বাঙ্গলার চিত্র-কলা ও ভাস্কৰ্য্য যাভা, বালি, প্রম্বনম্ ও সুমাত্রা প্রভৃতি দ্বীপে প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল। ডক্টর সিলভ্য। লেভির পুস্তকের ‘ক্যাটালগে’ একখানি চিত্ৰ-বিদ্যাবিষয়ক পুস্তকে গ্রন্থকার তাঙ্গার বাঙ্গালী গুরুকে বন্দনা করিয়া পুস্তকখানির মুখবন্ধ করিয়াছিলেন।