পাতা:প্রাচীন ভারতে নারী - ক্ষিতিমোহন সেন (১৯৫০).pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
প্রাচীন ভারতে নারী

শূদ্রাদের কোনো কাল-নিয়ম নাই, ধর্ম-ব্যতিক্রমও নাই। বিশেষতঃ সন্তান না থাকিলে এক বৎসরের পর পত্যন্তরগ্রহণে শূদ্রার কোনো দোষই নাই (ঐ ১০২)। যদি পতির কোনো খবর না পাওয়া যায় তবে এই বিধি। তাহার কোনো খবর-বার্তা জানিলে ইহার দ্বিগুণকাল প্রতীক্ষা করিবে (ঐ ১০৩)। প্রজাপ্রবৃত্তির জন্যই প্রজাপতির সৃষ্টি, তাই এইভাবে সমাজে প্রজাস্থিতির জন্য অন্য-পুরুষ-গমনে নারীদের কোনো দোষই হয় না (ঐ ১০৪)।

 গৌতমও অনুরূপ স্থলে পত্যন্তরগ্রহণের ব্যবস্থা দিয়াছেন (গৌতম সংহিতা, ১৮ অধ্যায়); গৌতম ধর্মসূত্রেও (১৮ অধ্যায়) এই বিষয়ের সমর্থন আছে এবং সেখানে ভাষ্যকার বৃহস্পতিরও সমর্থক-বচন উদ্ধৃত করিয়াছেন।[১]

 বসিষ্ঠ সংহিতাও বলেন, স্বামী প্রোষিত হইলে পঞ্চবর্ষ প্রতীক্ষা করিবে। প্রজাতা অর্থাৎ সন্তানবতী হইলে ব্রাহ্মণী পাঁচ বৎসর, ক্ষত্রিয়া চারি বৎসর, বৈশ্যা তিন বৎসর, শূদ্রা দুই বৎসর প্রতীক্ষা করিবে। ইহার পরে সমানোদক সপিণ্ড সজন্ম স-ঋষি ও সগোত্রের মধ্যে পূর্ব পূর্বই শ্রেষ্ঠ। তাহা প্রাপ্তিতে তাহাকেই পতিরূপে গ্রহণ করিবে। স্বকুলজাত পাইলে পরগামিনী হইবে না।[২]


 আনন্দাশ্রম সংস্করণে আর-একটু এইখানে আছে— পঞ্চবর্ষ প্রতীক্ষা করিয়া পতির কাছে প্রোষিত পত্নী যাইবে। যদি ধর্মার্থ বা কামার্থ যাওয়া সম্ভব না হয়, তবে বিধবার মত ব্রতধারিণী হইয়া প্রতীক্ষা করিবে। প্রজাতা ব্রাহ্মণী ক্ষত্রিয়া বৈশ্যা শূদ্রা পাঁচ-চার-তিন-দুই বৎসর প্রতীক্ষা করিয়া তাহার পরে পতির সমানোদক, সপিণ্ড, সপ্রবর, সগোত্র পত্যন্তর গ্রহণ করিবে। ইহাতে সগোত্র অপেক্ষা সপ্রবর ভালো। তদপেক্ষা সপিণ্ড, তদপেক্ষা সমানোদক ভালো। স্বকুলজাত পাইলে পরগামিনী হইবে না।[৩]


  1. Mysore Tribes and Castes, Vol II, পৃ ৩৬০
  2. বসিষ্ঠ সংহিতা, মন্মথনাথ দত্ত সংস্করণ, ১৭ অধ্যায়
  3. বসিষ্ঠস্মৃতি, আনন্দাশ্রম, ১৭. ৬৭. ৭১