পাতা:প্রাচীন ভারতে নারী - ক্ষিতিমোহন সেন (১৯৫০).pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্ত্রীধন
৮৯

পুত্রের ও পুত্রবধূর ভরণ-পোষণে এই স্ত্রীধন হইতে ভার্যা ব্যয় করিলে দোষ হয় না—

তদাত্মপুত্রস্নুযাভর্মণি প্রবাসাপ্রতিবিধানে চ ভার্যায়া ভোক্তুমদোষঃ। ঐ

 দস্যু প্রভৃতির আক্রমণে ব্যাধি-দুর্ভিক্ষ-ভয় প্রতিকারে এবং ধর্মকার্যে পতি যদি ইহা হইতে ব্যয় করেন তবে দোষ হয় না—

প্রতিরোধকব্যাধিদুর্ভিক্ষভয়প্রতিকারে ধর্মকার্যে চ পত্যুঃ। ঐ

 সন্তান হইবার পরে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলিয়া যদি তিন বৎসর এই স্ত্রীধন হইতে ভোগ করে, তবে ব্রাহ্ম দৈব আর্য ও প্রাজাপত্য এই চতুর্বিধ ধর্মিষ্ঠ বিবাহবিধিতে পরিণীত হইয়া থাকিলে পতি বা পত্নী কাহারও অপরাধ হইবে না—

সম্ভূয় বা দম্পত্যোর্মিথুনং প্রজাতয়োস্ত্রিবর্ষোভুক্তং চ ধর্মিষ্ঠেষু বিবাহেষু নানুষুঞ্জীত। ঐ

 যদি গান্ধর্ব ও আসুর বিবাহ হইয়া থাকে এবং এমন স্থলে সুদসহ এই স্ত্রীধন পূরাইয়া দিতে হইবে—

গন্ধর্বাসুরোপভুক্তং সবৃদ্ধিকমুভয়ং দাপ্যেত। ঐ

 যদি রাক্ষস ও পৈশাচ বিধিতে বিবাহ হইয়া থাকে এবং স্ত্রীধন যদি কোনো কারণে লওয়া হয় তবে তাহাকে চুরির দায়ে দেওয়া হইবে—

রাক্ষসপৈশাচোপভুক্তং স্তেয়ং দদ্যাৎ। ঐ
ইতি বিবাহধর্মঃ। ঐ

 দেখা যাইতেছে, অর্থশাস্ত্র স্ত্রীধন সম্বন্ধে রীতিমত খুঁটিনাটি ধরিয়া অধিকার ও তাহার ব্যতিক্রমে আইনের ব্যবস্থা দেখাইয়াছেন।

 পতিবিয়োগের পরের কথা আলোচনা করিয়া অর্থশাস্ত্র বলিতেছেন, স্বামী মারা গেলে ধর্মকামা (অর্থাৎ যে নারী পত্যন্তর গ্রহণ করিতে চাহেন না) পত্নী তখনই তাহার স্থাপ্য (দ্বিসহস্র হইতে অধিক হইলে যে বৃত্তি জ্ঞাতিদের কাছে স্থাপ্য ছিল) এবং আভরণ ও বিবাহশুল্কের যদি কিছু অংশ প্রাপ্য থাকে তবে তাহা পাইবেন—

মৃতে ভর্তরি ধর্মকামা তদানীমেবাস্থাপ্যাভরণং শুল্কশেষং চ লভেত। ঐ

আইনত পাইয়াও যদি এই স্ত্রীধন তাহার তখনই হস্তগত না হয় তবে সুদ সমেত তাহাকে দিতে হইবে—

লব্ধা বাবিন্দমানা সবৃন্ধিকমুভয়ং দাপ্যেত। ঐ, পৃ ১৫