পাতা:প্রেমিক গুরু.djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨88 প্রেমিক-গুরু মানসে সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করিতেছে। সন্ন্যাসিগণ হিন্দুসমাজের শীর্ষ স্থানীয় ; তাই হিন্দুগণ সাধুসন্ন্যাসিগণকে হৃদয়ের শ্রদ্ধা-ভক্তি অর্পণ করিয়া থাকে, অস্থৰ্যম্পস্ত কুলবধুগণ অবাধে ও অকুষ্ঠিতচিত্তে সাধুর নিকট গমন এবং সন্তাষালাপাদি করে। অনেক বদমায়েস সেইজন্ত পবিত্র সন্ন্যাসীর সাজে আবরিত হইয়া সাধারণের চক্ষে ধুলিনিক্ষেপ করতঃ আপন মতলৰসিদ্ধি ও নিশ্চিন্তে বিনা পরিশ্রমে উদ্বরপোষণ করিয়া বেড়াইতেছে । ভাল জিনিষেরই ভেল বাহির হইয়া থাকে, সুতরাং ইহাতেও সন্ন্যাসাশ্রমের মহত্ত্বই বিঘোষিত হইতেছে । কিন্তু সাধারণ লোকে এইরূপ ভণ্ড কর্তৃক পুনঃ পুনঃ প্রতারিত হইয়া আর সাধুসন্ন্যাসীকে সরল প্রাণে সেবাপুঞ্জ করিতে সাহসী হয় না। বিশেষতঃ অপরিশুদ্ধচিত্ত বশতঃ প্রকৃত সাধু মহাত্মাকে চিনিবারও তাহাদের শক্তি নাই । ‘ সাচ্চা কহেত মারে লাঠি, কুট জগৎ ভুলায়" কাজেই আড়ম্বরপূর্ণ রচন-বচনবাগীশ ভণ্ডই সমাজের লোকদিগকে মুগ্ধকরতঃ মতলব সিদ্ধি করিয়া লয়। সাধারণে প্রকৃত সাধুকে অগ্রাহ্য করিয়া, তাহাদের আপন আপন হৃদয়ের আদর্শানুযায়ী জটাজুটসমযুক্ত,চিমটা-করঙ্গধারী বিরাট সন্ন্যাসীর অনুসরণ করিয়া থাকে। তাহার কৃতসাধুর নিকট যাইয়া মুখ না পাইয়া তাহাদের সাধুত্বে সন্দিহান হইয় পড়ে। কাজেই সমাজের দুর্দশার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃত সাধু দূরে সরিয়া পড়িতেছেন ; আর সে স্থান যত চোর প্রতারকে অধিকার করিয়া লইতেছে। নতুবা সাধু স্বৰ্য্যস্বরূপ ; অন্ধে তাহ দেখিতে ন পাইলেও অধ্যাত্ম-চক্ষুবিশিষ্ট ব্যক্তির নিকট কি তাহারাষ্ট্রপ্রকাশিত থাকিতে পারেন? সাধুর শান্ত ও আনন্দঘনমূৰ্ত্তি, ত্রিতাপক্লিষ্ট জীব যাহার নিকট যাইয়৷ অন্ততঃ ক্ষণেকের জন্যও শাস্তি ও আনন্দ পায়, তিনিই যথার্থ সাধু। এতদ্ভিন্ন শাস্ত্রেও প্রকৃত সাধুর সুমহান লক্ষণগুলি সুন্দরভাবে প্রকটত আছে । কোন শাস্ত্রেই ঐশ্রজালিকতা ও শক্তিমা সাধুর লক্ষণে লিখিত হয়,নাই।