পাতা:প্রেমিক গুরু.djvu/২৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন্মুক্তি ২৬৫ হরি ও ঈশানে ভেদ বুদ্ধি করিলে নিরয়গামী হইতে হয় । সুতরাং তাহারা উভয়ে যে এক, তাঁহাতে সন্দেহ নাই । কিন্তু বাহ্যতঃ আকাশপাতাল ভেদ-কৃষ্ট হয়। একজন সৰ্ব্বস্বত্যাগী শ্মশানবাসী,—খর্পর মাত্র সম্বল-বিরূপবেশে ভ্রমণ করিতেছেন ; কাজেই হর ত্যাগী-বৈরাগী— সন্ন্যাসী। অপর একজন মণিমুক্তাখচিত ও নৃত্যগীতপূরিত বৈকুণ্ঠবিহারী, পার্শ্বে অনুপম সুন্দরী ; কাজেই হরি ভোগী—বিলাসী-গৃহবাসী। স্থূলতঃ উভয়ের মধ্যে পার্থক্য দৃষ্ট হইলেও মূলতঃ কোন বিভিন্নতা নাট। শিব সন্ন্যাসী সত্য !—কিন্তু দেখিয়াছ কি, উছার কোলে কে ? বিশ্বমোহিনী রমণী, উনি কে ? উনি জীবজগৎৰূপা বিশ্বরূপিণী প্রকৃতি। শিব সন্ন্যাসী হইয়া আমিত্ব ও আমিত্বের সংঙ্কীর্ণ গওঁ ভাঙ্গিয়াছেন বটে ; কিন্তু জগৎসংসারকে বুকে জড়াইয়া ধরিয়াছেন ; পরার্থে স্বার্থ পদদলিত করিয়াছেন, —র্তাহার নিজের বলিতে কিছুই নাই বটে ; কিন্তু তিনি প্রত্যেক ভূতের হিতসাধনে রত ; তাই ভূতনাথ নামে পরিচিত। তাহা হইলে শিব সন্ন্যাসী হইয়াও সংসারে লিপ্ত। আর আমরা হরিকে গোকুলবিহারীরূপে দেখিয়াছি যে, তিনি গোকুলে গোপ-গোপীর প্রেমে মাতোয়ার ;– রাধাপ্রেমে যেন বিষ্কবল, রাধার সামান্ত অবহেলাতে রাধাকুণ্ডে প্রাণ পরিত্যাগে উদ্যত । সকলেই জানিত শ্ৰীকৃষ্ণের রাধাগত জীবন ;–রাধার ক্ষণকালের বিরহে বুঝি তিনি বাচিতেন না । কিন্তু কৈ ? যেমন অক্রুর আসিয়া মথুরার সংবাদ বিজ্ঞাপিত করিলেন, অমনি শ্ৰীকৃষ্ণ মখুর রওনা হইলেন, রাধার নিকট বিদায় লইয়া যাওয়ার আবখ্যক বোধ করিলেন না । শ্রীকৃষ্ণের মথুরা গমন সংবাদ পাইয়া সঙ্গিনীগণ সহ রঙ্গিণী ৱাই আসিয়া পথিমধ্যে রথচক্রের নিয়ে বুক দিয়া পড়িয়া বলিলেন, “আমাদের হৃদয় রথচক্রেনিম্পেষিত করিয়া মথুরা গমন কর।” শ্ৰীকৃষ্ণ সেই প্রেমোন্মাদিনী গোপ-রমণীর মৰ্ম্মভেদী কাতরতায় ক্ৰক্ষেপ না করিয়া মথুরা চলিয়া গেলেন। রাম