ইউরোপীয় অজ্ঞানতা W করিবার সময়ে, সূৰ্য্যদেবের দক্ষিণ দিক হইতেই উদিত হইবার কথা । ইহা একালের বালকবৃন্দও অলীক কাহিনী বলিয়া প্ৰত্যাখ্যান করে না । কিন্তু সেকালে হেরোদোতসের ন্যায় মনীষীবর্গও ইহাতে আস্থাস্থাপন করিতে অসম্মত হইয়াছিলেন । আফ্রিকা প্ৰদক্ষিণ করিয়া, প্ৰাচ্য হইতে প্ৰতীচ্য জনপদে বাণিজ্যপোত চালনা করিবার এই সকল পুরাতন প্রমাণ ইউরোপের অপরিজ্ঞাত ছিল না । কিন্তু ইউরোপ তাহাতে আস্থাস্থাপন করিতে পারিত না । এরূপ পুরাকাহিনী অলীক কাহিনী বলিয়াই প্রত্যাখ্যাত হইত। বিষুব-রেখা পৃথিবীকে উত্তর দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া রাখিয়াছে ;-সে কথা অপরিজ্ঞাত ছিল না। কিন্তু বিষুব-রেখা যে সকল জলস্থলের উপর দিয়া অবস্থিত আছে, তাহার স্বাভাবিক তাপধিক্য সম্বন্ধে নানারূপ অতিশয়োক্তি প্রচারিত হইয়াছিল। এত উত্তাপ খে, তাহা মানবশক্তিকে ভস্ম করিয়া ফেলিবে ! বিষুব-রেখার নিকটে যখন এত উত্তাপ, তাহার দক্ষিণে হয় ত উত্তাপাধিক্যের অবধি নাই। এই সকল জ্ঞানান্ধ ভ্ৰান্ত সংস্কার ইউরোপকে বহুকাল পৰ্য্যন্ত আফ্রিকার দক্ষিণাংশে গমনাগমনের কল্পনা পরিত্যাগ করিতে চ শিক্ষাদান করিয়াছিল। ইউরোপীয় পুরাতন সাহিত্যে আফ্রিকার পশ্চিমোপকূলের সমুদ্রপথ অবিজ্ঞাত ! আটলাণ্টিক মহাসাগর যেন এক অভেদ্য কুহেলিকায় সমাচ্ছন্ন ! তাহা অপরিজ্ঞাতি-অপরিজ্ঞেয়-অন্ধকার । এই বিশ্বাস কেবল ইউরোপকেই উপহাসাম্পদ করে নাই ;-ইসলামের পক্ষে ও ইহা উপহাসের বিষয় হইয়া রহিয়াছে ! ইসলাম এক সময়ে প্রতীচ্য মানবসমাজে জ্ঞানবিস্তার কাৰ্য্যে ব্যাপৃত হইয়াও, স্বয়ং বহু বিষয়ে অজ্ঞের ন্যায় আচরণ করিতেন । মুসলমান মনীষিগণ বলিতেন, - আটলাণ্টিক মহাসাগরে অধিকদূর অগ্রসর হইবার সম্ভাবনা নাই! মুসলমান আফ্রিকা প্ৰদক্ষিণ করিয়া, আটলাণ্টিক সাগরপথে ইউরোপে পদার্পণ করিবার সন্ধান-লাভ করিলে, মুসলমানকে ইউরোপ হইতে
পাতা:ফিরিঙ্গি-বণিক্.djvu/৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।