পাতা:ফুলমণি ও করুণার বিবরণ.pdf/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

২৯৪

ধার করিতে হয় নাই, কেননা আমার স্বামী এখন প্রত্যহ কর্ম্মে যাইয়া আট দশ টাকা মাসে উপার্জন করে। অদ্য গীর্জায় যাইবার সময়ে সে এই শাড়ি খানি বাহির করিয়া বলিল, এই লও করুণা, সকলের স্ত্রী অদ্য ভাল কাপড় পরিবে, অতএব তুমি কেন মোটা কাপড় পরিয়া যাইবা? আমার যদি শক্তি থাকিত, তবে আমি তোমাকে দশ টাকার শাড়ি আনিয়া দিতাম, কেননা তুমি তাহার যোগ্যপাত্র বটে। পরে করুণা আরো উল্লাসিতা হইয়া বলিতে লাগিল, মেম সাহেব, দশ টাকার শাড়ি আমার কি আবশ্যক? তাহার নিকটে যে এমত প্রেমিক কথা শুনিলাম, সেই আমার যথেষ্ট হইল। এবং এই শাড়ি খানি যে মন্দ তাহাও নয়; আমার বিবাহের দিবস অবধি আজি পর্য্যন্ত আমি রেসমের কাপড় কখন পরি নাই, কিন্তু অদ্য আমার এই সৌভাগ্য হইল।

 এই ক্ষুদ্র ঘটনাতে প্রকাশ হইল যে করুণা মৃদু ব্যবহার ও শিষ্ট কথাদ্বারা আপন দুষ্ট স্বামিকে নিতান্ত বশীভূত করিয়াছিল। হে পাঠক বর্গেরা! তোমাদের মধ্যে কাহারও পতি যদি অশিষ্ট থাকে, তবে সে করুণার অনুকারিণী হউক।