II9 ফুলের মালা । শরুকে নিজের মুখে মৃত্যুদণ্ড জ্ঞাপন করিয়া আপনার ক্ষমতা দেখাইতে আসিয়াছে ! কারাগার। মুক্তবাতায়ন পথে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া গণেশদেব কঠোর ভূমিশয্যায় শয়ান আছেন। সন্ধ্যাকালে বাদশাহের নিকট হইতে র্তাহার মুক্তির প্রস্তাব আসিয়াছিল। প্রস্তাবের মৰ্ম্ম এই, কোন স্বত্রে কখনও গণেশদেৰ বাদসাহের প্রতিকুলাচরণ না - করিয়া যদি দ্যায়ান্তায় অবিচারে তাহার পক্ষাবলম্বন করিতে শপথ করেন ; তাহা হইলে মুলতান জাহাকে মুক্তি প্রদান কপ্লিবেন । গণেশদেব রাজামুগ্ৰহ অগ্রাহ করিয়াছেন। এইরূপ চিরদাসত্বে আপনাকে বদ্ধ করা অপেক্ষ মৃত্যু ও তাছার বরণীয়। যেই ঘৃণিত প্রস্তাব মনে করিয়া এখন পর্য্যস্ত ও মাঝে মাঝে তিনি ক্রোধকম্পিত হইয়া উল্লিতেছেন ; আবার মাঝে মাঝে প্রিয়বিচ্ছিন্ন মুমুধু ব্যক্তির কাতরতা সেই ক্রোধের স্থান গ্রহণ করিতেছে । রাজার মল্লিতে দুঃখ নাই, দ্যায়ের জন্ত প্রাণ দিতে তিনি কাতর নছেন ; কিন্তু তিনি মরিলে তাহার আত্মীয়স্বজনের কিরূপ দুর্দশ ঘটিবে, ইহা ভাবিয় তাহার যন্ত্রন-পীড়িত হৃদয়ে আৰ্ত্তনাদ উত্থিত হইতেছে। শেষ সময়ে একবার কাহারও সহিত দেখা পৰ্য্যন্ত হইল না, এমন বন্ধুও কেহ নাই যাহাকে তাহদের সম্বন্ধে কোন একটি কথা পৰ্য্যস্ত বলিয়া যাইতে পারেন । গণেশদেব যতই এই নৈৱাশ্যবেদন গতীয়রূপে অনুভব করিতেছেন ততই মৃত্যুর সমীপবৰ্ত্তী হইয়াও মৃত্যুতে অবিশ্বাস, এবং ঈশ্বরের স্তায়বিচারের উপর বিশ্বাস জন্মিতেছে। তাহার মনে হইতেছে কোন ঐশীশক্তিপ্রভাবে এখনি কারাগারের কঠিন দেয়াল দ্বিধাযুক্ত হইয়। তাছাকে মুক্তিপ্রদান করিৰে।
পাতা:ফুলের মালা.djvu/১৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।