ফুলের মালা । >8会 প্রজ্জ্বলিত হোমাগ্নির সম্মুখে সন্ন্যাসিনী মুদ্রিতনয়নে আসীন । শক্তি এমন নিঃশব্দে তাহার পশ্চাতে আসিয়া দাড়াইল যে সন্ন্যাসিনী তাহ জানিতেও পরিলেন না। তিনি মন্ত্র পড়িতে পড়িতে অগ্নিতে আহুতি প্রদান করিলেন—অগ্নি জলিয়া উঠিল, সবলোখিত ক্ষিপ্ত বিক্ষিপ্ত শিখারাশি গৃহছাদ স্পশ করিতে লাগিল, শক্তির নয়নে যেন রক্সের ফোয়ার ছুটিতে লাগিল, তাছা হইতে ছিন্ন মুগুরাশি খসিয়া খসিয়া গড়িতে লাগিল। শক্তি বদ্ধদৃষ্টি হইয় তাহার দিকে চাহিয়া রহিল, সহসা ফোয়ারার উচ্ছাস স্তম্ভিত হইল, ছিন্ন মুগুরাশি শূন্তে চতুষ্কোণভাবে সজ্জিত শ্রেণীবদ্ধ হইল, তাহার উপর আলোক সিংহাসন প্রত্যক্ষ হইল, সিংহাসনে এ কাছার মূৰ্হি! শক্তি প্রথর দৃষ্টিতে তাহাকে চিনিবার প্রয়াস করিল। এই সময় সন্ন্যাধির্মী অার একবার স্বাস্থ মন্ত্র উচ্চারণ পুৰ্ব্বক কহিলেন,--“হে সৰ্ব্বশক্তিমতি, ভগবানের ব্যক্তরূপা প্রকৃতি ! তুমি প্রসন্ন হও । তোমার করুণার বিশ্ব সংসারের উৎপত্তি স্থিতি, তোমার ক্রোধে ইছার প্রলয় বিনাশ ! তুমি রূদ্রারূপে এ দেশের এই দুৰ্দ্দশ্য অনিয়ন করিয়াছ, তোমার প্রসন্ন কটাক্ষে ইহার দুঃখ দূর কর । তুমি করুণা করিয়া গণেশদেবকে মুক্তি প্রদান কর—এই অত্যাচারপীড়িত হতভাগ্য দেশে সৌভাগ্যের উদয় হউক !” শক্তি সন্ন্যাসিনীর আরাধ্য দেবীর প্রতিনিধিস্বরূপে উত্তর করিল, “তথাস্তু ! মহাশক্তি আমাকেই সেই কাৰ্য্যে নিয়োজিত করিয়া এখানে প্রেরণ করিয়াছেন।” সন্ন্যাসিনা চক্ষু উল্মীলিত করিয়া শক্তিকে দেখিয়া বলিলেন, “তুমি শক্তি ! মুলতান! তুমি গণেশদেবকে মুক্তি দিবে ?”
পাতা:ফুলের মালা.djvu/১৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।