পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন । SVoS পুরাণ, তন্ত্র, সাহিত্য, অলঙ্কার ও আয়ুৰ্বেদ প্ৰভৃতি শাস্ত্ৰ পড়িত। অনেক লোকে পাণ্ডিত্যের জন্য তঁহকে শ্রদ্ধাভক্তি করিত। বৰ্দ্ধমানাধিপতি মহারাজ ত্ৰিলোকচন্দ্রের আহবানে রাজদরবারে যাইয়া তিনি শাস্ত্ৰালাপে অনেক পণ্ডিতকে পরাজিত করিয়া মহারাজের গ্ৰীতিঅর্জন করেন। জগন্নাথের স্মৃতিশক্তি পরীক্ষার জন্য মহারাজ জগন্নাথকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি ত্ৰিবেণী হইতে বৰ্দ্ধমান আসিবার কালে পথে কি কি দেখিয়াছেন বলুন তাঁ।” জগন্নাথ আনুপূর্বিক সমস্ত বলিলেন। তাহা শুনিয়া এবং জগন্নাথের অসাধারণ স্মরণশক্তিদর্শনে বিস্মিত হইয়া বৰ্দ্ধমানাধিপতি তঁহাকে পাণ্ডুয়া পরগণার হেদুয়াপোতা নামক একখানি গ্ৰাম তাহাকে পুরুষানুক্ৰমে নিষ্কর ভোগদখল করিবার অধিকার দেন। তৎসঙ্গে রাজা তাহাকে একটি পুষ্করিণীও প্ৰদান করিয়াছিলেন। পরে মহারাজা শুনিতে পাইলেন, তর্কপঞ্চাননকে তিনি যে পুষ্করিণী দান করিয়াছেন, তাহার পরিমাণ জলে স্থলে তিনশত বিঘা। জগন্নাথ কিছুদিন পরে বৰ্দ্ধমানে আসিলে রাজা বলিলেন, “আপনাকে যে পুষ্করিণীটা দেওয়া হইয়াছে, তাহা ‘পুষ্করিণীটি” নহে, তাহা ‘পুষ্করিণীটা।” জগন্নাথ তাহা শুনিয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন “আপনিও তারাজাট নহেন, রাজাটা”। বলা বাহুল্য, রাজা এই মন্তব্যে এতদূর সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন যে, তিনি পুষ্করিণী সম্বন্ধে আর কোন দিন কোন প্রকার উচ্চবাচ্য করেন না। মুর্শিদাবাদের নবাবের দেওয়ান রায় রায় রাজা একবার তর্কপঞ্চাননের সহিত পরিচিত হইবার জন্য র্তাহাকে আপনি দরবারে আমন্ত্রণ করেন। তর্কপঞ্চাননের যুক্তি-তর্ক ও শাস্ত্ৰজ্ঞান-দর্শনে মোহিত হইয়া তিনি তর্কপঞ্চানন মহাশয়কে “২২ শিরোপা।” পুরস্কার প্রদান করেন। সে সময়ে ইহা অপেক্ষা উচ্চতম সম্মান রাজদরবারে অন্য কিছু ছিল না। শুধু ইহাই নহে, তর্কপঞ্চানন ইচ্ছামত দালান-কোঠা-নিৰ্ম্মাণ, পাৰী আরোহণ করিবার এবং নিজ বাটীতে “নহবৎ” বসাইবার অনুমতি