পাতা:বংশ-পরিচয় (ঊনবিংশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওড়াকান্দীর ঠাকুর বংশ RVU) ঠাকুরের জীবনলীলা এমন সুন্দরভাবে বর্ণনা করিতেন যে লোকে ঠাকুরের প্রতি আকৃষ্ট না হইয়া পারিত না। তাহার রচিত শ্ৰীশ্ৰীহরি লীলামৃত ও শ্ৰীশ্ৰীমহাসংকীৰ্ত্তন গ্ৰন্থ অদ্যাবধি ঠাকুরের ভক্তগণ অতি যত্ন ও ভক্তি সহকারে পাঠ করিয়া থাকে। লীলামৃতে ঠাকুরের জীবনী ও লীলা লিখিত আছে এবং মহাসংকীৰ্ত্তনে ঠাকুর সম্বন্ধে ভক্তিরসপূর্ণ বহু গীতি রচিত হইয়াছে। বস্তুতঃ তারকচন্দ্রের জন্যই ঠাকুরের ধৰ্ম্মমত বাংলার এক প্ৰান্ত হইতে অন্য প্ৰান্তে ব্যাপকভাবে দ্রুত বিস্তার লাভ করিয়াছে। শ্ৰীশ্ৰীহরি ঠাকুরকে তাহাব ভক্তগণ ভগবানের অবতার জ্ঞান করেন। যদি পতিতের উদ্ধার করিবার জন্যই ভগবান মৰ্ত্তে আগমন করিয়া থাকেন, তবে শ্ৰীশ্ৰীহবি ঠাকুব ভগবানের পূর্ণ অবতার তাহাতে কোনই সন্দেহ নাই। এই সময়ে বাংলাব নমঃশূদ্র জাতির তথা সমগ্ৰ অনুন্নত জাতি সমূহের অবস্থা পৰ্য্যালোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায় যে, ইহারা অতিশয় ঘূর্ণিত সামাজিক এবং ধৰ্ম্মজীবন যাপন করিত। একারণ তথা কথিত উচ্চবর্ণের হিন্দুগণ কর্তৃক ইহারা নিপীড়িত এবং উপেক্ষিত হইয়া” আসিতেছিল। অস্পশুত দোষ এতদূৰ প্ৰবল ছিল যে অনুন্নত হিন্দুরা আত্মমৰ্য্যাদা জ্ঞানশূন্য হইয়া উচ্চবর্ণের হিন্দুদিগের সম্মুখে নিজেদের কুকুর হইতেও অধম মনে করিত। ইহাদিগের মধ্যে বিদ্যার চর্চা একেবারেই ছিল না। দরিদ্রতা পূর্ণমাত্রায় বিরাজ করিত। বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্ম হইলেও এবং শ্ৰীশ্ৰীচৈতন্যদেব জাতিভেদ প্ৰথা এবং অস্পশুতার বিরুদ্ধে ঘোর সংগ্ৰাম চালাইয়া হরিনামে জাতিবর্ণনির্বিশেষে সকলের মধ্যে সাম্যবাদ প্রচার করিলেও তঁাহার অন্তধনের পরে বৈষ্ণব ভক্তগণের মধ্যে জাতিভেদ প্ৰথা আবার জাগরিত হইল। অস্পশুতো নূতন মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়া হিন্দুসমাজ আক্ৰমণ করিল। ফলে চৈতন্যদেবের ধৰ্ম্ম জনসাধারণের ধৰ্ম্ম ( mass religion) aircee অনুন্নত সম্প্রদায়ের বৈষ্ণবগণ বৈষ্ণবধৰ্ম্মাধিকারে বঞ্চিত হইয়া “বাউল” নামক একপ্ৰকার অতিশয় নিকৃষ্ট ধৰ্ম্ম অনুসরণ