পাতা:বংশ-পরিচয় (একাদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বৰ্গীয় মহারাজা শ্ৰীরামচন্দ্ৰ ভঞ্জদেব 8 বিবাহের পর মহারাজ শ্ৰীরামচন্দ্ৰ ইংরেজী ভাষায় লিখিত আর একখানি পত্রে দেওয়ান বাহাদুরকে এই মৰ্ম্মে লিখিয়াছিলেন“আমি যে কাৰ্য্য করিয়াছি তাহাতে ভয়ের কারণ কিছুই নাই, তথাপি ইহার দায়িত্ব উপলব্ধি করিয়া আমি উদ্বিগ্ন হইতেছি। আমি এই ব্যাপারে জনগণের সম্মতি-লাভের আকাজক্ষা করি নাই । আমি কেবল চাহিয়াছিলাম তাহদের সহিষ্ণুতা ; আমার মনে হয়, উহা প্ৰায় কাৰ্য্যে পরিণত হইবার উপক্রম হইয়াছে । আমি তাহদের মনোভাব বেশ বুঝিতে পারিতেছি ; যদি আমার অবস্থা তাঁহাদের মত হইত, তাহা হইলে তাহারা যাহা করিয়াছে আমিও তাঁহাই করিতাম, অবশ্য তাহ অপেক্ষা মন্দ কিছু করিতাম না। আমি তাহদের মনের অবস্থা ও উদ্দেশ্য বুঝিতে পারিতেছি বলিয়াই আমার উদ্বেগ আরও অধিক হইতেছে, নহিলে হয়ত হইত না ।” উপরে উদ্ধত পত্র দুইটি হইতে মহারাজের মনের ভাব প্রকৃষ্টরূপে প্রকট হইয়াছে। মহারাজা বুঝিয়াছিলেন যে, ন্যায় ও কৰ্ত্তব্য র্তাহার পক্ষে। তিনি আরও বুঝিয়াছিলেন যে, প্ৰজাবৃন্দের অসম্মতিও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তিনি বুঝিয়াছিলেন যে, এই ব্যাপারে তঁহাকে তঁাহার প্ৰাণাপেক্ষ প্ৰিয় প্ৰজাবৃন্দের শ্রদ্ধা ও প্রীতি হইতে র্তাহাকে বঞ্চিত হইতে হইবে । ইহা একটি অগ্নিপরীক্ষা । দুইটী বিরুদ্ধ ভাবের সংঘর্ষে তাহার হৃদয়ে প্ৰবল আন্দোলন উখিত হইয়াছিল। অবশেষে তিনি বৈষয়িক নীতিকে উপেক্ষা করিয়া ধৰ্ম্মবুদ্ধিকেই শ্রেষ্ঠ আসন প্ৰদান করিয়া এই বিপুল ত্যাগ স্বীকার করিয়াছিলেন । বিপুল আত্মত্যাগের বেদীর উপর তঁাহার দ্বিতীয় বারের উদ্বাহ কাৰ্য্য প্রতিষ্ঠিত । ১৯০৪ খৃষ্টাব্দে কলিকাতা সহরে এই বিবাহ কাৰ্য্য সম্পাদিত হইয়াছিল। এই বিবাহ ময়ুরভঞ্জরাজ্যের প্রজামণ্ডলীর পূর্ণ অনুমোদন কখনই লাভ করে নাই ।