পাতা:বংশ-পরিচয় (ত্রয়োদশ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর Nove) পাকস্থলীতে অন্ন পরিপাক হইত না । সিদ্ধ করা বার্লি, পালো ইত্যাদি লঘুতম আহাৰ্য্যই তাহার অবলম্বন ছিল। চিকিৎসা চলিতে লাগিল ; কিন্তু বিশেষ কোনও ফল হইল না । অবশেষে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি বায়ু পরিবর্তন ও নিৰ্জনবাসের জন্য ফরাসডাঙ্গায় গঙ্গাতীরে এক স্বাস্থ্যকর সুন্দর বাটীতে গমন করেন। এখানে তিনি কলিকাতা অপেক্ষা সুস্থ ছিলেন । ফরাসডাঙ্গায় তিনি চৈত্র মাস পৰ্য্যন্ত ছিলেন । বৈশাখ মাসে আবার পীড়া বৃদ্ধি পায়। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে হঠাৎ র্তাহার পাজরে বেদন ধরে এবং তিনি কনিষ্ঠ দৌহিত্র যতীশচন্দ্ৰকে সঙ্গে লইয়া কলিকাতায় চলিয়া আসেন। উদরাময় রোগের জন্য বিদ্যাসাগরমহাশয় আফিম খাইতে আরম্ভ কৰি য়াছিলেন। আফিম খাইলে দুধ খাইতে হয়। কিন্তু দুধ পেটে সহ্যু হয় না । সেইজন্য তিনি আফিম ত্যাগ করিবার সঙ্কল্প করেন। এজন্য কেহ কেহ। বিপদের আশঙ্কা করিয়াছিলেন । শেষে কিন্তু আফিম ত্যাগ করাই স্থির হয়। এক হেকিমের নিকট হইতে আফিম ত্যাগের ঔষধ আনাইয়া তিনি খাইয়াছিলেন। সেই ঔষধ খাইবার পর হইতেই তঁহার পীড়া ক্ৰমেই বাড়িতে থাকে। ডাক্তার অমূল্যচরণ বসু দিবারাত্র তাহার নিকট বসিয়া রোগের গতি নিরীক্ষণ করিতেন। একদিন ভাল, একদিন মন্দ এইরূপ করিতে করিতে শ্রাবণ মাস আসিল। বর্ষা নামিল। পুরাতন গ্ৰহণীরোগ কায়েমী হইয়া বসিল । বিদ্যাসাগরমহাশয় শয্যাগ্ৰহণ করিলেন। ইহার পূর্বে তিনি উঠিতে বসিতে পারিতেন ; কিন্তু ৪ঠা শ্রাবণ হইতে আর তাহা পারিলেন না। অবশেষে ১৩ই শ্রাবণ (সন ১৯৯৮ সাল ) মঙ্গলবার রাত্রি ২টা ১৮ মিনিটের সময়ে দয়ার সাগর বিদ্যাসাগরমহাশয় ইহলোক হইতে চিরবিদায় গ্ৰহণ করিলেন ।