পাতা:বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি । 0 0 ל সাধনা করিতেন এবং শিষ্যদিগকে যত্নের সহিত তাহা শিক্ষাদিতেন। পশ্চাৎকালে কতিপয় স্থদৃঢ় উপাসক ঐ জ্ঞান সাধনাৰ্থে এতই প্রমত্ত হইয়াছিলেন যে, তাহারা এই পরিবর্তনশীল, শোকদুঃখময় ও অধ্যয়নের বাধক সংসারের প্রতি একেবারে উদাসীন হইয়া সেই মধুর ব্রহ্মনাম বক্ষে করত দুর্গম অরণ্যে বাস করিয়াছিলেন। জ্বলন্ত সূৰ্য্য দর্শন করিলে যেমন অপর সর্ব পদার্থ তমসাচ্ছন্ন হয়; তাহারা সেই ধ্রুব,সত্য, জ্বলন্ত পরম দেবতাকে জ্ঞান-নেত্রে দর্শন করত এই সংসারকে তিমিরাবৃত দেখিয়াছিলেন । বাস্তবিকই মানব ঈশ্বরকে লইয়া উন্মত্ত হইয়া উঠিলে কোথায় বা স্ত্রী পুত্র কোথায় বা সন্তান সন্ততির মায়া । সেই সকল পরম-শ্রদ্ধাস্পদ ও পরমভগবদ্ভক্ত উদাসীনগণ ঘোরতর-বিষয়োম্মভদিগের প্রতি এক প্রকার বিরক্ত হইয়াই ব্যবস্থা দিয়াছিলেন যে, গৃহস্থের বাটতে ঐ পরমশাস্ত্র সকল পড়িতে নাই এবং গৃহস্থ ব্রহ্মোপাসনার অধিকারী নহে। এই কারণে, যে ব্রহ্মোপাসনা ভারতীয় উপনিষৎ ও বেদান্তরূপ কল্প-বৃক্ষের ফলস্বরূপ এবং যাহা আদিতে গৃহস্থ ঋষিগণের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হইত, তাহ কালক্রমে প্রায় সন্ন্যাসীগণেরই অধিকারস্থ হইল। মহাত্মা রামমোহন রায় শুভক্ষণে জন্মগ্রহণ করিয়া যখন এই ভারতকৰ্ম্ম-ভূমির প্রতি সস্নেহ নয়নে দৃষ্টিপাত করিলেন, তখন তাহাকে একপ্রকার জীবনশূন্য দেখিলেন। তিনি দেখিলেন যে, যে বেদ বেদান্ত ভারতবর্ষের মূল শাস্ত্র, তাহ পরিত্যাগ করিয়া লোকসকল অজ্ঞানের দাসত্বে বদ্ধ আছে এবং তাহারদের প্রতিপালিত ধৰ্ম্ম-মত সকল কর্ণ-বিহীন তরীর ন্যায় অভিনব বিল্লাবক খৃষ্টান-ধর্মের তর্ক তরঙ্গে ঘূর্ণায়মান হইতেছে।