পাতা:বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি.pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ፃ8 বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি । সমরে কৃতকাৰ্য্য হওয়ার জন্যই রামচন্দ্র মহামায়ার আরাধনা করিয়াছিলেন। আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, অর্জুনকে যুদ্ধে উৎসাহিত করিবার নিমিত্তে শ্ৰীকৃষ্ণ ব্ৰহ্মজ্ঞান ও যোগকুদ্ধিতে দীক্ষিত করিয়াছিলেন । - ৩ । ভারতীয় শাস্ত্রের আদেশ যে, ন্যায়-যুদ্ধে প্রাণত্যাগ করিলেও অক্ষয় স্বৰ্গ হয়। যোদ্ধারা সাধারণতঃ এই বিশ্বাসে সমরে অবতরণ করিতেন। প্রাণের ভয়, স্ত্রী পুত্রের মমতা, ঐ সংকৰ্ম্মে বাধা দিত না। যদিও সাধারণ লোকের এই ভাব ছিল, কিন্তু যদি ঐ স্বৰ্গভোগের আশা স্বাৰ্থ বলিয়া গণ্য হয় এজন্য জ্ঞানী যোদ্ধারা কেবল কৰ্ত্তব্য-বুদ্ধির অনুরোধেই ঘোরতর সমরে প্রবৃত্ত হইতেন। শ্ৰীকৃষ্ণ অৰ্জ্জুনকে স্বৰ্গভোগের আশা দেখাইয়া অবশ্যই মনে করিয়াছিলেন যে, অর্জনের উন্নতবুদ্ধির অধিকারে ঐ আশা মিষ্ট লাগিল না ; তখন কছিলেন “স্থখদুঃখে সমে কৃত্বা লাভালাভৌ জয়াজয়োঁ। ততোযুদ্ধায় যুজ্যস্ব নৈবং পাপমবাপ্ৰস্তসি ॥” —“যদ্যপি সুখ, দুঃখ ; জয়, পরাজয় ; লাভ, অলাভ সমান জ্ঞান করিয়া অবশ্ব-করণীয়-কৰ্ম্ম-জ্ঞানপূর্বক যুদ্ধে প্রবৃত্ত হও তলে কখনই পাপ হইবে না।” কিন্তু জ্ঞানী ভিন্ন অন্যের সে বুদ্ধিতে অধিকার হয় না ; গীতাশাস্ত্রের সর্বত্রেই তাহার আভাস রহিয়াছে। ৪। বেদসংহিতা ও পুরাণাদি শাস্ত্রে যাগ যজ্ঞের সহিত যুদ্ধের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ যাহা বর্ণিত আছে তাহা বুঝা কঠিন নহে, কিন্তু আত্মজ্ঞান ও যোগাঙ্গের সহিতও যে তাহার সম্বন্ধ তাহা বুঝা সকলের সাধ্য নহে। গীতাশাস্ত্রে ক্রমে ক্রমে আত্ম-বিজ্ঞান ও কৰ্ম্মযোগের দ্বারা ঐ সম্বন্ধ স্থন্দররাপে বুঝাইয়া দিয়াছেন।