পাতা:বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি.pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গীতা এবং তাহার উদ্দেশ্য। ծեrծ মুখ্য উদ্দেশু। অর্জুনকে সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী করিবার নিমিত্তে গীতাতে যোগ কথিত হয় নাই, কিন্তু শোক ত্যাগপূর্বক বল বীৰ্য্য সহকারে যুদ্ধ করিবার জন্যই অধ্যাত্ম-বিজ্ঞান ও ক্রিয়া-যোগ কথিত হইয়াছে। ব্রহ্মস্বাপহারী, পাণ্ডুকুল-বিদ্বেষী, পৃথিবীর কণ্টক-স্বরূপ কৌরবগণকে উৎসন্ন করা প্রয়োজন হইয়াছিল। তাদৃশ-স্থলে মমতা-প্রকাশ—দয়া-প্রকাশ–উহাদের গুণ-স্মরণ কাপুরুষত্ব। শ্ৰীকৃষ্ণ দেখিলেন তত্ত্বজ্ঞান ব্যতীত উক্ত যুদ্ধের বাধস্বরূপ শোক নষ্ট হয় না ; এজন্য প্রথমেই আত্মার অমরত্ব বিষয়ে উপদেশ দিলেন । তিনি কহিলেন যে, আমরা সকলেই দেহ-বিনাশের উত্তরকালে নিত্য-আত্মা-স্বরূপে অবস্থিতি করিব, এই বর্তমান দেহে যেমন বাল্য, যৌবন, জীর্ণবস্থা ক্রমে দেখা দেয়, আর তাহার পর পর অবস্থা প্রাপ্তে, পূর্ব পূর্ব অবস্থার স্মৃত ‘অহং ইত্যাকার জ্ঞান বিকার প্রাপ্ত হয় না, অর্থাৎ ‘ সেই আমি বোধ থাকে ; তদ্রুপ এই দেহ নাশের উত্তর কালে লিঙ্গদেহ-নিবন্ধন আত্মার স্বরূপ ও পূৰ্ব্ব সংস্কার সম্বন্ধে অন্যথা-ভাব হয় না। এই আত্মাকে কেহ নষ্ট করিতে পারে না এবং ইনিও প্রকৃত প্রস্তাবে কাহাকে হনন করেন না । শস্ত্র ইহঁাকে ছেদন করিতে পারে না, পাবক দহন করিতে পারে না, আপ গলিত করিতে পারে না এবং মারুত শোষণ করিতে পারে না ।

  • জীবাত্মা হননের কৰ্ত্ত নহেন, ইহা বুঝা আপাততঃ যদিও কঠিন ; কিন্তু বিশেষ বিচার করিয়া দেখা গিয়াছে যে, উহা অসঙ্গত নহে। বেদান্ত ও সাংখ্য শাস্ত্র দ্বারা বিচার করিলে উহার সুন্দর তাৎপৰ্য্য লাভ হয়। আমার স্বষ্টি ও বেদাস্তপ্রবেশ গ্রন্থে স্থলবিশেষে আমি এইরূপ বিচারের আভাস দিয়াছি। উক্ত গ্রন্থদ্বয় যন্ত্রালয়ে প্রেরিত হওয়ায় সে সকল স্থল নির্দেশ করিতে পারিলাম না।