পাতা:বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ বস্তৃতাকুসুমাঞ্জলি। ব্রাহ্মণে এবং স্মার্তসূত্র ও স্মৃতিনিবন্ধে সংসারের প্রতি বিতৃষ্ণ দৃষ্ট হয় না এবং প্রাচীন ও প্রধান প্রধান উপনিষদের দ্রষ্ট। ঋষিগণ সকলেই সংসারী ও মহাকৰ্ম্মী ছিলেন। অঙ্গিরা,শৌনক, বশিষ্ঠ, জনক, যাজ্ঞবান্ধ্য, ব্যাস প্রভৃতি মহর্ষিগণ গৃহস্থ ছিলেন। রাজ্য, ধন, জন, হস্তী, অশ্ব, রথ, গো সৰ্ব্বপ্রকার সম্পত্তি লইয়া তাহারা ব্যবহার করিতেন। ঐ প্রকার গৃহস্থ ঋষিগণই শ্রুতি ও স্মৃতিশাস্ত্রের দ্রষ্টা ও রচয়িত। এতাবতা, ঈশ্বর ও সংসার এই উভয়ের সামঞ্জস্যপূর্বক জীবনযাত্র নিৰ্বাহ করা শাস্ত্র ও ব্যবহার-সম্মত। ৩। শঙ্করাচার্য্য প্রভৃতি কতিপয় মহাত্মা পরমেশ্বরের জাজ্বল্যমান ভাবে উন্মত্ত হইয়। সংসার পরিত্যাগ করত অধিক অবসর লাভপূর্বক যে, ব্রহ্মনাম প্রচার করিয়াছিলেন সে স্বতন্ত্র কথা । সেরূপ নিস্বার্থ ও অব্যর্থ মুক্তিপ্রদ ব্রহ্মাত্মভাব সকলের ভাগ্যে লাভ হয় না । কিন্তু হৃদয়ে সেরূপ ভাব জন্মে নাই এবং তাদৃশাবস্থায় তাহারদের ন্যায় শাস্ত্র-পাঠ, গ্রন্থরচনা ও কঠোর প্রচার-কাৰ্য্য করিবার ক্ষমতাও নাই, অথচ আলস্য, ক্ৰোধ, অভিমান ইত্যাদি কারণে সংসারধৰ্ম্ম ত্যাগপূর্বক বাহ্যে সন্ন্যাসী হওয়া নিতান্তই বিড়ম্বনার বিষয়। যদিও বঙ্গদেশের মধ্যে ঐরুপ বিরক্ত লোক অধিক নাহি কিন্তু বেহার হইতে পঞ্জাব পৰ্য্যন্ত ভ্রমণ করিয়া দেখ, অসংখ্য অসংখ্য নিষ্কৰ্ম্ম৷ সন্ন্যাসী ও সাধুনামধারী অজ্ঞান পাষগুদিগের সম্প্রদায় সকল দেখিতে পাইবে । তাহারা সাধু নামে আপনাদিগের পরিচয় দেয়, কিন্তু যেমন পুরুষকারে বঞ্চিত, সেইরূপ, ব্ৰহ্মজ্ঞানের তো কথাই নাই, সর্বপ্রকার ধৰ্ম্মজ্ঞানে বঞ্চিত হইয়া আপনারদের আলস্য ও অভিমানের প্রতিফল ভোগ করিতেছে।