পাতা:বক্তৃতাকুসুমাঞ্জলি.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԵՀ - " বস্তৃতাকুসুমাঞ্জলি । সেই অবস্থার নাম মন । কিন্তু প্রকৃতপ্রস্তাবে মনও যাহা জীবাত্মাও তাহা । স্থানবিশেষে শাস্ত্রে লেখেন যে, পরমেশ্বর যেমন বাক্য মনের অগোচর সেইরূপ বুদ্ধিরও অগোচর। তাদৃশ স্থলে মন আর বুদ্ধির মধ্যে প্রভেদ এই যে,সংশয়াত্মিক অন্তঃকরণবৃত্তির নাম মন এবং নিশ্চয়াত্মিক অন্তঃকরণবৃত্তির নাম বুদ্ধি। তন্মধ্যে অভিমানাত্মিক অন্তঃকরণবৃত্তি যে অহঙ্কার তাহা মনের অন্তর্গত এবং অনুসন্ধানাত্মিক অন্তঃকরণবৃত্তি যে চিত্ত তাহা বুদ্ধির অন্তর্গত। ফলতঃ সাধারণতঃ এ সমুদয়ই বিশেষ বিশেষ মনোবৃত্তিমাত্র এবং সেই মন আত্মার বিষয়ব্যাপার-বিশিষ্ট অবস্থাগত উপাধিমাত্র । এ সম্বন্ধে বেদান্তদর্শনে অতি বহুল বিচার আছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত এই যে, মন মানবাত্মার অবস্থা-গত উপাধি-বিশেষ। মানব-আত্মা যখন বিষয়ের জ্ঞান গ্রহণ, স্মরণ, মনন ইত্যাদি করে তখনই তাহারই নাম মন হয় । তথাপি ব্ৰহ্ম-বিষয়েও চিন্তা, স্মরণ, মনন করা কর্তব্য বলিয়া উক্ত হইয়াছে। ফলে সেপ্রকার স্মরণ, মনন বা চিন্তা দ্বারা ব্রহ্ম লাভ হয় না, কেবল অনিত্য বস্তুর প্রকৃতিচিন্তা এবং ব্রহ্ম-বিষয়ক জ্ঞানের বাধক যে বিষয়াত্মিক মতি তাছাই ক্রমে পরিত্যাগের উপায় হয়। অতএব তাদৃশ স্মরণ, মনন সাক্ষাৎ-সম্বন্ধে ব্ৰহ্ম-প্রাপ্তির অবস্থা নহে কিন্তু তাহ ব্ৰহ্ম-জ্ঞানে আরোহণের সোপানমাত্র। ব্রহ্মকে যখন জীবন্তভাবে হৃদয়-ধামে লাভ হয় তখন জীবাত্মার বিষয়-সম্বন্ধ তিরোহিত হইয়া যায়। সে সময়ে জীবাত্মা কেবল ব্রহ্মকেই উপভোগ করে। বিষয়-সম্বন্ধ-তিরোভাব জন্য তখন মন, বুদ্ধি, চিত্ত, অহঙ্কার এই চতুৰ্ব্বিধ অন্তঃকরণ-বৃত্তি-প্রবাহ জীবাত্মাতে সামঞ্জসীভূত ও সংযত হইয়া যায়। তখন বাক্য নীরব হয়,