পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 —“ভয় নেই, ফেরৎ পাবেন। দরকার আছে, নিয়ে যাচ্ছি।” বলিয়া তিনি ঘর হইতে ব্যারাকের বারান্দায় আসিলেন।

 বারান্দায় একটা লোহার খাটিয়াতে বসিয়া অফিস-আর্দালী নীলাদ্রি বাবুদের প্রদত্ত সিগারেট সেবন করিতেছিল। প্রভু বলিলেন, “চল।”

 নীলাদ্রি বলিল, “চলিয়ে।”

 বাবুদের সঙ্গে করিয়া অফিসে পৌঁছাইয়া দেওয়া ও ফিরাইয়া আনার ডিউটি নীলাদ্রি ও আর একজন সিপাহীর উপর ন্যস্ত ছিল। তাহারা ক্যাম্পের গেটে বা ভিতরেই থাকিত।

 আমরা গেট পর্যন্ত প্রভুর অনুগমন করিলাম। গেটে একটা ঝাঁকা সম্মুখে রাখিয়া প্রভুর পেয়ারের ভূটিয়া চাকর বাচ্চু অপেক্ষা করিতেছিল। প্রভু বলিলেন, “নে চল।”

 বাচ্চু ঝাঁকাটা মাথায় লইয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। আর আমরা বিস্ময়ে হাঁ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিলাম। ঝাঁকাটার মধ্যে রক্ষিত চীজগুলিই আমাদের বিস্ময়ের হেতু।

 দেখিলাম, তাহাতে ছোট বড় মাঝারি নানা সাইজের বঁটি রহিয়াছে, নানা সাইজের বৈঁঠা মানে পিতলের খুক্তি-হাতা রহিয়াছে, রহিয়াছে দা ও মুরগী-কাটা ছুরি, রহিয়াছে সোডার বোতল এবং নানা সাইজের পাথরের টুকরা। সেই ঝাঁকা মাথায় বাচ্চু চলিয়াছে পিছনে, আর মশারী-টানাইবার-হাত আড়াই লম্বা একটা লোহার ডাণ্ডা হাতে অগ্রে অগ্রে চলিয়াছেন আমাদের প্রভু ফন রুণডাস্।

 গেটের সিপাহী বন্দুক হাতে আগাইয়া আসিয়া লোহার প্রকাণ্ড গেটটা খুলিয়া দিয়া আমাদের মতই হাঁ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিল। প্রভু গেট পার হইয়া নীলাদ্রি ও বাচ্চুসহ অদৃশ্য হইয়া গেলেন। আর, আমাদের চিন্তাটা দুশ্চিন্তার তুঙ্গে উঠিয়া স্থির হইয়া রহিল।

 ঘণ্টা দুয়েক সারা ক্যাম্পটা কুম্ভক মারিয়া অপেক্ষা করার পর আমরা শ্বাস ছাড়িয়া বাঁচিলাম, বাচ্চু ও নীলাদ্রিসহ প্রভু ফিরিয়া আসিয়াছেন। আর সঙ্গে

১০২