পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এই অভিযোগকে নাকি সুরের মেকী কান্না বলিয়া সাব্যস্ত করিতে আমরা বাধ্য। গুণ আছে, অথচ তার প্রকাশ নাই, স্বীকৃতি নাই—এতবড় মিথ্যা কথা আর হইতেই পারে না।

 অবশ্য, জোনাকী যদি তার এক-কণা আলোর সম্পত্তি লইয়া নিজেকে সূর্যের সগোত্র বলিয়া সূর্যের সম্মান দাবী করে, তবে সে আলাদা কথা। অভিযোগ বা নাকি সুরের কান্না রাখিয়া শান্ত মনে বিশ্বাস করিতে হইবে যে, গুণ থাকিলে তার প্রকাশ ও স্বীকৃতি দুইই আছে। গুণের তারতম্যে স্বীকৃতিরও তারতম্য ঘটে। সূর্যকে দেখার জন্য প্রার্থনা করিতে হয়, তোমার হিরণ্ময় আবরণ অপসারণ কর, নইলে যে তোমাকে দেখা সম্ভব হয় না। আবার জোনাকীকে বলিতে হয়, তোমার পুচ্ছের আলোক-বিন্দুটি, জ্বালো নতুবা অন্ধকারে যে তোমার অস্তিত্বই মালুম হয় না।

 জোনাকী হইয়া যদি সূর্যের সঙ্গে স্পর্ধা করিবার জেদ হয় তবে সে রাস্তাও যে খোলা নাই, এমন নহে। ঐ গুণেব খোলা রাস্তাটা অনুসরণ করিতে হয়। সকল গুণ যেখানে নিঃশেষে শেষ হইয়াছে, সেখানকার ছোঁয়া পাইলে পঙ্গু পর্বত পার হয়, বোবা বাগ্মী হয় এবং জোনাকীর জ্যোতিতেও সূর্য নিষ্প্রভ হয়। এখন একটা ‘অতএব’ দিয়া বলা যাক, গুণ থাকিলে তাহা প্রকাশ হইবেই, তাকে চাপিয়া রাখার সাধ্য সৃষ্টিতে কারো নাই।

 বকসা-ক্যাম্পে আমরা মোট সংখ্যা ছিলাম প্রায় দেড়শ। ইহার মধ্যে কেহই আমরা গুণহীন বা তেমন নির্গুণ ছিলাম না। কারণ, গুণহীন বস্তু বা ব্যক্তি সৃষ্টিতে অসম্ভব, যেমন অসম্ভব আলোহীন সূর্য। এতগুলি গুণীর সমাবেশে স্থানটি রীতিমত সরগরম হইয়া থাকিত। কাহাকে রাখিয়া যে কাহাকে দেখি, তাহা ঠিক করা এক দুরূহ ব্যাপার। কাহাকেও ছোট বলিয়া এড়াইয়া যাইবার উপায় নাই, কারণ বিজ্ঞাপনে দেখিয়াছি যে, শিশি বড় দেখিলেই হয় না, ওজন দেখিতে হয়। বিপদ কি এক রকমের! যাহাকে বাদ দিব সে-ই হয়তো এই ধরণের মস্তবড় একটা সার্টিফিকেট নাকের

১০৮