সামনে প্রমাণরূপে মেলিয়া ধরিবে, তখন সে দলিল অগ্রাহ্য করে কার সাধ্য। কবি কি খামকা কাঁদিয়া বলিতে বাধ্য হইয়াছিলেন যে, “তুমি আমায় ফেলেছ কোন ফাঁদে?” এই দেড়শত গুণীর সমাবেশ, গুণের গরমে বক্সা-ক্যাম্প সরগরম, এর মধ্যে কাহাকে বাদ দিয়া কাহাকে বাছিয়া লইব, ভাবিয়া কোন কূলকিনারা পাইতেছি না। কিংকর্তব্যবিমূঢ় কথাটা সাধে কি উচ্চারণে এমন সঙ্গীন ঠেকে! এই রকম সঙ্গীন অবস্থাতেই তো ঐ শব্দটা প্রয়োগ করার বিধি আছে, যেমন নাভিশ্বাস উঠিলে কস্তুরীর ব্যবস্থা।
সেই কস্তুরীতেই ফিরিয়া আসা গেল, বাঁচা গেছে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরিয়া আসিতে পারিয়াছি। কস্তুরী-মৃগ গন্ধ লুকাইয়া রাখিতে পারে না, ধরা পড়িয়া যায়, অমর চ্যাটার্জীও (দক্ষিণ কলিকাতা) আবিষ্কৃত হইয়া পড়িলেন। কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করিয়াছিলেন, মহেন্দ্র ব্যানার্জী অমর চ্যাটার্জীকে আবিষ্কার করিলেন। ইহা যে কত বড় আবিষ্কার, তাহা বক্সার বন্দীমাত্রেই স্বীকার পাইবেন। আপনারাও অনুগ্রহ করিয়া মানিয়া লউন যে, অমর চ্যাটার্জী আবিষ্কৃত হওয়ায় বক্সার জীবনে আড্ডা বস্তুটি দানা বাঁধিবার সুযোগ পাইয়াছিল। অমর চ্যাটার্জী যদি স্বদেশী দলে না ঢুকিত, তবে বড়গোছের একজন কাপ্তান মানুষ হইতে পারিত, আমার ও আমার মত অনেকেরই ধারণা। প্রথমে ক্যাম্পে তার একটা নাম প্রচলিত হয় “মারফৎ।” কিন্তু এই নামটির আয়ু বেশী দিন ছিল না, পরে আর একটি নাম হয় “ওস্তাদ” এবং এটীই স্থায়ী হয়। অমর চ্যাটার্জী একজন উঁচু-দরের তবলচী, সেই সূত্রেই নামটি প্রদত্ত হইয়াছিল।
প্রথম দেখাতেই ভদ্রলোককে কতকটা চিনিয়াছিলাম। প্রাতঃকৃত্যের পর বাথরুম হইতে উপরে ফিরিয়া আসিতেছিলাম, কিন্তু মাঝ পথেই থামিতে হইল। বাদামী রংয়ের কুকুর দুইটা মাটি শুঁকিতে শুঁকিতে আগাইয়া আসিতেছে, পৃথিবীর গাত্রের ঘ্রাণ লইয়াই যেন সকল রহস্য আবিষ্কার করিবে। পিছনে আসিতেছেন সপরিষদ ফিণী সাহেব। পথের মধ্যে বাবুরা তাঁর
১০৯