পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গতিরোধ করিলেন। একজন দুইজন করিয়া বেশ ছোটখাটো ভীড় জমিয়া গেল। সাহেবের সঙ্গে মুখোমুখি যার যা অভিযোগ বা বক্তব্যের লেনদেন চলিতে লাগিল। আমিও ভীড়ের কিনারায় স্থান গ্রহণ করিলাম, এমন সময়—

 এমন সময়ে পায়জামা পায়ে, ভি-কলার গেঞ্জি গায়ে, টাওয়েলের পাগড়ী-আঁটা ন্যাড়া মাথায় হাতে একটা নিমের দাঁতন লইয়া বেঁটেখাটো মজবুত চেহারার এক ভদ্রলোক আসিয়া আমার পাশে দাঁড়াইল।

 জিজ্ঞাসা করিল, “শালা বাংলা জানে?”

 শুনিয়া ভালো করিয়া ফিরিয়া তাকাইলাম। কথাটা কিন্তু যথাস্থানে মানে শালার কর্ণে প্রবেশ করিল।

 ফেণী সাহেব সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিলেন, “হাঁ, বাঙলা জানে।”

 শুনিয়া বক্তা জিভ কাটিল, অর্থাৎ লজ্জা প্রকাশ করিল এবং মুখে বলিল— “এই সেরেছে।”— অন্যান্য সকলে হাসিটা কোন মতে চাপিয়া রাখিলেন।

 কিন্তু বেঁটে ভদ্রলোক ইহাতে মোটেই অপ্রতিভ হইল না, আগাইয়া গিয়া ফিণী সাহেবের মুখোমুখি দাঁড়াইল।

 তারপর বলিল, “বাঙলা তো জান সাহেব বুঝলাম। কিন্তু ধোবা কবে আসবে, তা কি জান?”

 মিঃ ফিণী উত্তরে বলিলেন, “আমি জলপাইগুড়িতে লিখেছি ধোবার জন্য।”

 —“তা ভালোই করেছ। কিন্তু কবে ধোবা আসবে, বলতে পার? কুড়ি দিন যায়, কাপড়-চোপড়ের কি অবস্থা হয়েছে, বুঝতে পার না?”

 সাহেব বলিলেন, “আমিতো লিখেছি—“

 শেষ করিতে না দিয়াই বক্তা বলিয়া উঠিল, “ওসব লেখালেখি আমি বুঝি না। আমার জামা-কাপড়, বিছানার চাদর, গেঞ্জি সমস্তই ময়লা হয়ে গেছে। তিন দিনের মধ্যে তোমার ধোবা যদি না আসে, তবে সোজা তোমাকে জানিয়ে দিচ্ছি, তুমি ক্যাম্পের ভিতরে ঢুকবে না।”

 বলিয়াই দাঁতন হাতে ঘুরিয়া দাঁড়াইল এবং ভীড় ঠেলিয়া বাহির হইয়া

১১০