দিদির কাছে এলাহাবাদ, জানেনই তো বিপদ কখনও একা আসে না। দিদি ভায়ের হাত দিয়েই ব্যাংক থেকে টাকা তুললেন, ফলে ঠিক ঐ একই কায়দায় হাতে এল পাঁচশ। ছোটখাটো একটা জমিদারই হয়ে গেলাম, কি বলেন?” বলিয়া আমাদের অভিমত চাহিল, না গর্ব প্রকাশ করিল ঠিক বুঝা গেল না।
—“এদিকে কলকাতায় বাড়িওয়ালা ফায়ার, এলাহাবাদে জরুরী চিঠি এল জামাইবাবুর কাছে, চোরকে আটক করে রাখ, ওকে আমি জেলে দেব। দিদির উত্তর গেল, চোর ভাগলবা, আমারও পঁচিশ গাপ করে সরেছে। ইতিমধ্যে ধরা পড়ে গেলাম পুলিশের হাতে। ব্যাটা কি বলে জানেন?”
আমরা জিজ্ঞাসা করিলাম, “না, কি বলেন?”
—“বলে কিনা, পুলিশে না ধরলে আমিই ওকে জেলে দিতাম, ও চোরকে আমি ঘানি টানিয়ে ছাড়তাম। পুণ্যের জোর ছিল, এখন তো মহাপুরুষদের আসরে এসে জুটেছি,” বলিয়া আমরা যত মহাপুরুষ উপস্থিত ছিলাম, তাহাদের সকলের উপর দিয়া দৃষ্টিটা ঝাঁটার মত মার্জনা করিয়া লইল। এখানে উল্লেখ থাকে যে, টাকাটা দলের কাজের জন্যই হস্তগত করা হইয়াছিল, ওটুকু ওস্তাদ ইচ্ছা করিয়াই চাপিয়া গিয়াছিল।
যতীনবাবু অমরের খবর জানিতেন, জিজ্ঞাসা করিলেন, “ফ্যামিলি-এলাউন্সের যে দরখাস্ত করেছিলে, তার কি উত্তর এল?”
প্রশ্নটির তাৎপর্য উপলব্ধি করিতে না পারিয়া আমরা জিজ্ঞাসু মুখে চাহিয়া রহিলাম, অনেকের চোখেমুখে বিরক্তিই দেখা দিল যে, এই আসরে আবার ওসব কথা কেন! কিন্তু যতীন দাশের চোখে মুখে যেন একটা কৌতুকের আভা পড়িয়াছিল।
মহেন্দ্রবাবু ওস্তাদকে কহিলেন, “বলেই ফেল না, এতটাই যখন পেরেছ, তখন ওটুকুতে আর লজ্জা কেন?”
১১৩