হোটেলওয়ালা নামটা শুনেই ভিতরে ভিতরে বিরক্ত হয়ে উঠেছেন, মুখে বল্লেন, না বলতে পারলেই সুখী হতাম, কিন্তু কেন?
ভদ্রলোক বল্লেন, তিনি দরখাস্তে বলেছেন যে, তাঁর আয়েই নাকি আপনার সংসার চলত।
হোটেলওয়ালা একেবারে ফেটে পড়ল, ভদ্রলোককে শেষ না করতে দিয়েই বলে উঠল, আপনি বেরোন, এক্ষুণি বেরিয়ে যান।
নিসপেট্টর তো অবাক। তিনি যত চেষ্টা করেন ব্যাপারটা বুঝিরে বলতে হোটেলওয়ালা ততই তেতে উঠে, পাড়ার লোক দৌড়ে এল ব্যাপার কি!
হোটেলওয়ালা সবাইকে শুনিয়ে বল্ল, শোন তোমরা, উনি এসে বলছেন যে, ঐ হারামজাদা গুয়োর ব্যাটা নাকি আমাদের খাওয়াতো পরাতো, তার টাকাতেই নাকি সংসার চলত। তার হয়ে এই ইনি এয়েছেন খবর নিতে, ওকালতী করতে। যান, আপনি বেরিয়ে যান, আমাকে চটাবেন না। চটে গেলে আমি কী যে করব, তার ঠিক নেই। সোজা বলছি, আপনারা ওকে ছেড়ে দিয়ে দেখুন, ওকে আমি জেল খাটাই কি না। চোর, চোর, কতটাকা যে চুরি করেছে, তা আপনি জানেন মশায়? ব্যাটাচ্ছেলের আয়ে সংসার চলে! না, আপনি বেরোন, আমি দরজা বন্ধ করি, বলে নিস্পেট্টরের মুখের উপরই দরজাটা বন্ধ করে দিল।”
ওস্তাদের বলার ভঙ্গীতে এবং ভাষার গাঁথুনিতে শ্রোতাদের চোখের সম্মুখে অমরের পিতার ক্রুদ্ধ মূর্তি, নিস্পেট্টরের অসহায় মুখের ছবি এবং দুইয়ে মিলাইয়া যে-পরিস্থিতি দাঁড়াইয়াছিল, তাহা একেবারে জ্বলজ্যান্ত হইয়া ফুটিয়া উঠিয়াছিল। হাসিতে হাসিতে আমাদের পেটে সত্যই সেদিন খিল ধরিয়া গিয়াছিল। একমাত্র বক্তাই এই হাসির ছোঁয়াচ হইতে নিজেকে দূরে সরাইয়া রাখিতে সক্ষম হইয়াছিল।
হাসির ভীড়ের মধ্যে অমরের পরের কয়েকটি কথা চাপা পড়িয়া গেল, কোন মতে তাহা জোড়াতালি দিয়া একটা বক্তব্য মনে খাড়া করিয়া লইলাম।
১১৬