জিজ্ঞাসা করিলাম “ঘরে কেউ নেই নাকি?” বলিয়া টিফিন-ঘরের দরজার দিকে ইঙ্গিত করিলাম।
খাঁ সাহেব নিম্নসুরে বলিলেন, “গোবিন্দ আছে।”
ডাক দিলাম, “গোবিন্দ?”
“আজ্ঞে”, বলিয়া গোবিন্দ ভিতর হইতে দরজায় আসিয়া দাঁড়াইল।
কহিলাম, “চা দেও।”
গোবিন্দ বলিল, “আপনি তো এই এলেন, উনি আধঘণ্টা বসে আছেন, চা পাননি।”
বিস্মিত হইলাম। কহিলাম, “দেওনি কেন?”
—“কেমন করে দেই?”
—“কেন?”
গোবিন্দ বলিল, “পরশুরাম বাজার আনতে গেছে।”
—“পরশুরামের কথা কে তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, তুমি খাঁ সাহেবকে চা দেওনি কেন?”
গোবিন্দ বলিল, “না শুনলে আমি কি করব, আমি তো বলেছি—”
—“কি বলেছ?”
—“বলেছি, পরশুরাম বাজার আনতে গেছে, না এলে হবে না।”
আবার প্রশ্ন করিলাম, “কেন হবে না?”
উত্তর হইল, “কেমন করে হবে? কাপ-প্লেট ধোয়া নেই।”
শুনিয়া রক্ত মাথায় চড়িয়া বসিল, ধমক দিতে যাইতেছিলাম, খাঁ সাহেব হাতে চাপ দিয়া থামাইয়া দিলেন।
পূর্ববৎ নিম্নসুরে কহিলেন, “কাপ-প্লেট ধোয়া পরশুরামের ভাগে পড়েছে কিনা, তাই। গোবিন্দের ভাগে পড়েচে চা তৈরী করা।”
ক্রোধকে যথাসাধ্য চাপিয়া রাখিয়া কহিলাম, “আধঘণ্টার মধ্যে তুমি নিজে একটা কাপ ধুয়ে চা দিতে পারতে না?”
১২২