—“পারব না কেন? ইচ্ছে করলেই পারতাম।”
—“এখন তবে দয়া করে সেই ইচ্ছেটা একবার কর।”
খাঁ সাহেব বলিয়া বসিলেন, “থাক গোবিন্দ, কষ্ট হবে, পরশুরাম আসুক।”
গোবিন্দ উত্তর দিল “আর থাকবে কেন, আমিই কাপ ধুয়ে চা করে দিচ্ছি।” বলিয়া টিফিন-ঘরে অদৃশ্য হইয়া গেল। কিন্তু আপনমনে একা একা কি যেন গোবিন্দ বলিতেছিল।
ডাকিয়া কহিলাম, “বলছ কি?”
উত্তর আসিল, কি আর বলব। বলছি, আপনারাই নিয়ম করে কাজ ভাগ করে দেবেন, আপনারাই আবার তা ভাঙ্গবেন—”
সহ্যের সীমা অতিক্রম বহু পূর্বেই করিয়া গিয়াছিল। বুঝিতে পারিয়া খাঁ সাহেব আবার বাধা দিলেন, “থাক, ঘাঁটিয়ে কাজ নেই। চলুন, উঠে পড়ি।”
কথাটা বোধ হয় গোবিন্দের কানে গিয়া থাকিবে, ভিতর হইতে হুকুম আসিল, “উঠবেন না, চা হয়ে গেছে, খেয়েই যান।”
দুই কাপ চা লইয়া গোবিন্দ উপস্থিত হইল, আমাদের সম্মুখে তাহা ধরিয়া দিয়া যাইতে যাইতে মন্তব্য করিল, “না খেয়ে যদি চলে যেতেন, দু-কাপ চা খামোকা নষ্ট হোত।”
চা-পান শেষ করিয়া দুইজনে বাহির হইয়া আসিলাম।
খাঁ সাহেব প্রশ্ন করিলেন, “চীজটি কেমন বুঝলেন?”
—“গোবিন্দ যদি না যায়, তবে অনেক বাবুকেই পাগল করে ছাড়বে, বলে রাখলাম।”
ব্যাপারটা দক্ষিণাদার কানে গেল। গোবিন্দ উপস্থিত ছিল না, চাকর-বাকরদের সম্মুখে তিনি মন্তব্য করিলেন, “ব্যাটাকে তাড়াতেই হোল দেখছি।”
কথাটা যথাস্থানে পৌঁছিতে বিলম্ব হইল না। গোবিন্দ শুনিতে পাইল যে, ম্যানেজারবাবু তাহাকে তাড়াইবার ইচ্ছা করিয়াছেন।
খাবার-ঘরে দক্ষিণাদাকে ঘিরিয়া বাবুরা আড্ডা জমাইয়াছিল। অনেকের
১২৩