বলিয়া পরিচিত। অত বড় দেহের মধ্যে যে-মনটি বসবাস করিতেছে, তাহাতে ঘোরপ্যাঁচের কোন হাঙ্গামা নাই। তেজস্বী নির্ভীক ব্যক্তি। চলনে বলনে একটা আন্তরিকতা সর্বদাই পরিস্ফুট। অল্প বয়সের বিপ্লবীদের মধ্যে যা কিছু একটা কবিবার যে তীব্র বেগ ও জ্বালা থাকে, বয়স বৃদ্ধিতেও সেই জ্বালা ইঁহাকে ত্যাগ কবে নাই। যাঁহারা সৈনিক ধাঁচের, তাঁহারাই বিশেষভাবে ইঁহার অনুরক্ত হইতেন। রবিবাবুর পরিচয় পূর্বে কিছু প্রদত্ত হইয়াছে। পরেও তাঁহার দেখা আপনারা আবার পাইবেন।
একটা খবর এখানে পেশ করিয়া রাখিতেছি যে, এই ভীমকায় ব্যক্তিটি ভোজনে প্রকৃতই বৃকোদর সদৃশ ছিলেন। ইনি ছিলেন পাঁঠার যম, দক্ষিণাদা একদিন ইঁহাকে সামনে বসাইয়া মাংস খাওয়াইয়াছিলেন—পরিমাণ দেখিয়া আমার তো ভিরমিই লাগিয়াছিল। আমার বিশ্বাস যে, প্রয়োজনীয় সময় দিলে প্রমাণ সাইজের একটা পাঁঠার সবটুকু মাংসই তিনি একা গ্রাস করিতে পারেন। বাঙালীদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও শক্তির বড়াই অবশ্যই তিনি করিতে পারেন।
তাঁহারই পাশে এবং তাঁহারও চেয়ে ইঞ্চিকতক লম্বা যে ভীমকায় ব্যক্তিকে দণ্ডায়মান দেখা যাইতেছে, তিনি আর কেহ নহেন, সন্তোষ দত্ত। স্কুলে থাকিতেই দেহের অস্বাভাবিক শক্তির জন্য অল্প বয়স সত্ত্বেও ডাকাতি ইত্যাদিতে অংশ নিতে পারিয়াছিলেন। ১৯১১/১২ সালে পূর্ণ দাসের সঙ্গে ষড়যন্ত্র-মামলার আসামী হিসাবে ফরিদপুর জেলে আবদ্ধ অবস্থায় ইনি এক কাণ্ড করিয়া বসিয়াছিলেন, যাহার উল্লেখ করিলে তিনি এই বয়সেও লজ্জিত হইয়া পড়েন। ল্যাঙ্গোটি আঁটিয়া তিনি বন্ধ ঘরের মধ্যে ব্যায়ামে ব্যস্ত ছিলেন, এমন সময়ে জনৈক জেল-কর্মচারী বন্ধ দরজার সম্মুখে আসিয়া দাঁড়ান। নেতৃস্থানীয় এক বিপ্লবীর সঙ্গে কি লইয়া কথা বলিতে বলিতে ভদ্রলোক উদ্ধত মেজাজে অভদ্র ভাষা প্রয়োগ করিয়া বসেন। শুনিয়া বয়সে অল্প কিছু দেহে-পূর্ণ ভীমকায় সন্তোষ দত্ত “তবেরে” আওয়াজ
১৩৩