পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রাখি না, কিন্তু ফেগু রায়ের হাড়েরও বজ্র তৈরী হইতে পারে, আমার বিশ্বাস।

 তাঁহারই পাশে মজবুত গঠন, চওড়া বুক ও সাধারণ বাঙালীর দৈর্ঘ্য লইয়া যিনি দণ্ডায়মান, তাঁহার চোখের ও চোয়ালের দিকে নিশ্চয় আপনার দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়াছে। ইনি সুরেশচন্দ্র দাস, বাঙলার রাজনীতিক্ষেত্রে কর্মী সংঘের নেতারূপে যিনি একদা একচ্ছত্র আধিপত্য করিয়াছেন। চোয়ালে চরিত্রের দৃঢ়তা ব্যক্ত, চোখের দৃষ্টির সারমর্ম, ‘কারো কাছে আমি কোন প্রত্যাশা করি না।’ সত্য কথা স্বপক্ষ বা বিপক্ষ কাহাকেও শুনাইতে ইনি দ্বিধা করেন না এবং বক্তব্য মোলায়েম বা প্রিয় করিয়া পেশ করিবার কোন বাহুল্যেই ইনি ভাষাকে ভারাক্রান্ত করেন না। দলের বা বে-দলের দুঃখ-দারিদ্র্যে এঁর মত বান্ধব খুব কমই আছে। পথচারী পথিকের সঙ্গে ইনি যে-ভাষায় ও ভাবে আলাপ করিবেন, স্বয়ং বড়লাটের সঙ্গেও সাক্ষাৎকালে তাহার ঈষৎ মাত্র পরিবর্তন ইনি করিবেন না, অর্থাৎ একই পোষাকে ও মূর্তিতে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ও সর্বপাত্রের সম্মুখীন ইনি হইবেন! সংগঠন শক্তি লইয়াই জন্মগ্রহণ করিয়াছেন। দলের ভার এই জাতীয় ব্যক্তিই বহন করিয়া থাকেন। দেশের জননেতারা ইঁহাকে বেশ একটু সমীহ এবং ভয় করিয়াই চলিতেন। সুরেশদা যুগান্তর পার্টির অ্যতম নেতা।

 তাঁহার পাশেই দীর্ঘকায় যে ভদ্রব্যক্তি দণ্ডায়মান, তিনি ময়মনসিংহের জ্ঞানবাবু (মজুমদার), অনুশীলন-পার্টির অনতম মাথা, ইংরাজীতে ব্রেন। কপালে বুদ্ধির চিহ্ন অতীব ব্যক্ত। জীবনে যে স্বল্প কয়টি বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে আমি দেখিয়াছি, ইনি তাঁহাদের মধ্যে একজন। বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে লোকে তেমন ভালোবাসে বলিয়া আমার ধারণা নাই। আমি কিন্তু মনে মনে জ্ঞানবাবুর জন্য একটা শ্রদ্ধাযুক্ত ভালোবাসাই বোধ করিতাম! যেদিন জ্ঞানবাবুকে খেলার মাঠে দেখি, তখনই আমি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হই। ফুটবল খেলায় এই বয়স্ক, ধনী, ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমান ব্যক্তি যে উঁচুদরের স্টাইল

১৩৫