পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 মিঃ হগ বলিলেন, “সেলাম দিবে কিনা বল?”

 হেডমাস্টার উত্তর দিলেন যে, নিজেদের মধ্যে এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করিবার সুযোগ দিতে হইবে, গান্ধীজীও “আদর্শ কয়েদী” বলিয়া যে-আচরণের পরামর্শ দিয়েছেন, তাহাও ভাবিয়া দেখিবার সুযোগ বন্দিরা পাইবে।

 মিঃ হগের অত ধৈর্য ছিল না, ধমকের সুরে বলিলেন, “আবহি বল।”

 সুরেনবাবু বলিলেন, “এইভাবে বলিলে সেলাম দেওয়া সম্ভব নহে।”

 —“বহুৎ আচ্ছা।”

 ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে অতঃপর হেডমাস্টারকে উলঙ্গ করিয়া কাঠের তেপায়া খাঁচাটার উপর তোলা হইল, হাত, পা, কোমর যথারীতি বন্ধনও করা হইল।

 আয়োজন সমাপ্ত হইলে সাহেব হুকুম দিলেন, “পঞ্চানন চকরবটীকে নিয়ে এস।”

 সেল হইতে পঞ্চাননবাবুকে বাহির করিয়া আনা হল, তিনি আসিয়া সাহেবের পার্শ্বে দণ্ডায়মান হইলেন। সমস্ত আবহাওয়াটা আতঙ্কে ও ভয়ে থম্-থম্।

 সাহসের অভাব না হইলেই যে শারীরিক সহ্য শক্তি বেশী হইবে, এমন কোন কথা নাই। দীর্ঘ বেত সপাং শব্দে হেড-মাস্টার মশায়ের দেহে কষিয়া বসিতেই তিনি এমন মর্মান্তিক আর্ত-চীৎকার করিয়া উঠিলেন যে, সম স্থানটিরই যেন হৃদপিণ্ড হঠাৎ ধক্ করিয়া বন্ধ হইবার উপক্রম হইল। সাহেবের মুখে একটা দানবীয় চাপা-হাসি প্রকাশিত হইল।

 পরে শুনিয়াছি যে, এই চীৎকারে জনৈক বয়স্ক উকীলের (তিনি সেলে বন্ধ ছিলেন।) নাভির নীচের স্নায়ুবন্ধন শিথিল হইয়া কাপড় ভিজাইয়া দিয়াছিল। নেতাদের মধ্যে পূর্ণ দাস, তমিজদ্দিন খাঁ (বর্তমানে পাকিস্থান গণ-পরিষদের সভাপতি) সুরেন বিশ্বাস প্রমুখ ব্যক্তিগণও এই চীৎকারে যে

১৪৫