পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ঋষির প্রত্যাশা যদি আমাদের একজনের জীবনেও পূর্ণ হইত, তবে দেশের ভাগ্য আমরা ফিরাইয়া দিতে পারিতাম। যে-শক্তিতে গান্ধীজী ভারতবর্ষকে আন্দোলিত করিয়া গিয়াছেন, তখন বাঙলার বিপ্লবীরা তাহার চেয়েও প্রবলতর ভাবে দেশ ও জাতিকে আন্দোলিত ও মন্থিত করিতে পারিত। সে-মন্থনে অমৃত যদি নাই বা উঠিত, অন্ততঃ বাঙলা-বিভাগের গরল উঠিত না, কিংবা সাম্প্রদায়িকতার বিষও সে-মন্থনে সঞ্জাত হইত না। বাঙলার বিপ্লবীদের কোন নেতা বা কর্মীর জীবনেই ঋষিকবির এই প্রত্যাশা পূর্ণ হয় নাই, কেহই নিজ জীবনে ঋষির জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে নাই।

 আজ নিজের নিভৃত মনের গহনে তাকাইয়া দেখিতে পাই যে, বাঙলার বিপ্লবের অসমাপ্ত যজ্ঞশালা পরিত্যক্ত পড়িয়া আছে, কিন্তু ভস্মমাঝে এখনও অগ্নি অবসান হয় নাই। মহাযাজ্ঞিক ও মহাতাপসের অপেক্ষায় এক কণা অগ্নি এখনও অপলক তাকাইয়া আছে।


 গ্রীষ্মকাল আসিল। আপনাদের একটু কষ্ট করিয়া আর একবার খেলার মাঠে যাইতে হইবে। আমাদের হকি খেলা দেখিয়াছেন, এবার ফুটবলের পালা। ভাবিতেছেন, হকি খেলা হইতেই আমাদের ফুটবল খেলাটাও অনুমান করিয়া লইতে পারিবেন? বৃথা চেষ্টা করিবেন না।

 শুনুন তবে, সিপাহীরা পর্যন্ত স্বীকার পাইল যে, ফুটবল খেলা না দেখিলে বাবুদের সঠিক পরিচয় জানা বাকী থাকিয়া যাইত। উঃ, কি প্রচণ্ড খেলা। ফুটবলে লাথি মারিতে গিয়া বাবুরা পাথর কিক্ করেন, কেষ্টবাবু ও অনুকুলবাবু এজন্য সামান্য মুখ-বিকৃতি পর্যন্ত করেন না। সিপাহীদের মহলে ধন্য-ধন্য পড়িয়া গেল। সাধে কি আর সাহেবেরা বাবুদের এত ভয় করেন।

 লীগের খেলা মারাত্মক অবস্থায় আসিয়াছে। পাঁচ নম্বর ও তিন নম্বর ব্যারাক পয়েণ্টে ভীষণভাবে কাছাকাছি হইয়া পড়িয়াছে—যেন দুইটি রেসের ঘোড়া পাশাপাশি ছুটিয়াছে, ঘাড় লম্বা করিয়া একে অপরকে হার মানাইবার শেষ চেষ্টা

১৫৫