পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করিতেছে, এমনই সঙ্গীন ও রোমাঞ্চকর ‘পরিস্থিতি’ সেটা। উত্তেজনার আর অবধি নাই।

 আমরা তিন-নম্বর ব্যারাক টীম গঠন লইয়া সমস্যায় পড়িলাম। আমাদের তিন-নম্বর ব্যারাকের গোলরক্ষক ছিলেন ক্ষিতীশবাবু (ব্যানার্জি)। একটু বর্ণনার আবশ্যক বোধ করিতেছি।

 ক্ষিতীশদা বয়স্ক ব্যক্তি, আর একটু ঠেল। দিলেই চল্লিশে পৌঁছিয়া যাইবেন। দৈর্ঘ্যে একটু কম, এই কমতিটুকু তিনি প্রস্থে প্রয়োজনেরও অধিক পোষাইয়া লইয়াছেন। ভুঁড়িটি দর্শনীয়, কিন্তু স্পর্শ করিলে টের পাওয়া যাইত যে, তাহা লোহার মত নিরেট। দেয়ালে বল লাগিলে যেমন প্রতিহত হইয়া ফিরিয়া আসে, আমাদের গোলরক্ষকের ভুঁড়ির দেয়ালে ধাক্কা খাইয়া তীব্র সটের বলকেও ‘মাগো’ ডাক ছাড়িয়া তেমনি তীব্রবেগে পিছু হটিয়া আসিতে হইয়াছে। ক্ষিতীশদার ভুঁড়ি সম্বন্ধে আমাদের মধ্যে নিম্নোক্তরূপ প্রশ্নোত্তর প্রচলিত ছিল:—

 —“কে যায়?”

 —“ভুঁড়ি যায়।”

 —“কার ভুঁড়ি?”

 —“ক্ষিতীশবাবুর।”

 —“তিনি কোথায়?”

 —“পিছনে আসিতেছেন।”

 চেহারার বর্ণনায় প্রত্যাবর্তন করা যাইতেছে। আমাদের এমন গোলরক্ষকের মুখে মানে নাকের নীচে একজোড়া গোঁফ, মুখের ডাহিনে বামে বাহু বিস্তার করিয়া মুখমণ্ডলকে আগুলিয়া আছে—যেন আগন্তুক মাত্রকেই জিজ্ঞাসা করিতেছে, “তুম্ কোন্ হ্যায় রে।” গোঁফজোড়া ক্ষিতীশদার গর্বের বস্তু ছিল। হাত দুইটি ছোট একজোড়া মুগুরের মত ঘাড় হইতে বিলম্বিত হইয়া আছে। ভীম কর্তৃক ময়দামর্দিত কীচকের খানিকটা আভাস যেন আনয়ন করে বলিয়া মনে হয়। ক্ষিতীশদা ভুঁড়িপেট লইয়া বরাবর আমাদের গোলরক্ষকের কাজ চালাইয়া

১৫৬