সন্তোষ দত্ত উত্তর দিলেন, “বুঝছেন না, তাহলে যে মণ্ডপ কাৎ হয়ে পড়বে। আত্ম-সম্মানে আঘাত লাগবে যে। আমাদের চ্যাম্পিয়ন কি রাজী হবেন গোল ছাড়তে?” বলিয়া তেরছ-নয়নে চ্যাম্পিয়নের দিকে ইঙ্গিত করিলেন।
“আমাদের চ্যাম্পিয়ন” কিন্তু রাজী হইয়া গেলেন, বলিলেন, “তবে তো বেঁচে যাই, একটা খেলার মত খেলাও দেখতে পারি। শুধু গোলে কেন, ব্যাকেও তো গোষ্ঠ দত্ত নিজে নামতে পারেন।”
বলিয়াই তিনি দৃষ্টিটাকে উপস্থিত সকলের উপর বুলাইয়া নিলেন। তাঁহার মুখের ভাবখানা এই যে, সন্তোষ দত্তকে গোষ্ঠ দত্ত নাম দিয়া তিনি যেন বাক্-যুদ্ধে সকলকেই ‘নক-আউট’ করিয়া ফেলিয়াছেন। উপস্থিত সকলেও ক্ষিতীশদার বক্তব্যে ও মুখের বিজয়ী ভঙ্গিমায় উৎফুল্ল হইয়া উঠিল।
সন্তোষ দত্ত উত্তর দিলেন, “গোল খালি রেখেও নামতে রাজী আছি কিন্তু বিভীষণকে গোলে রেখে—”কথাটা আর শেষ করিতে পারিলেন না। সকলের সমবেত হাসির মধ্যে তাহা চাপা পড়িয়া গেল। চ্যাম্পিয়ন হইতে একেবারে বিভীষণে নামাইয়া আনা, সন্তোষবাবু যেন ক্ষিতীশদাকে একটি প্যাঁচে ডিগবাজী খাওয়াইয়া দিলেন।
অবশেষে ঠিক হইল, আগামীকল্য ভোরেই একটা প্র্যাকটিস ম্যাচ হইবে, তিন-নম্বরের পক্ষে রবিবাবু গোলে, আর সন্তোষদা ব্যাকে খেলিবেন। রবিবাবুকে রাজী করাইবার কথা উঠিলে সন্তোষদাই বলিলেন, “সে ভার আমার, ওটা আমার উপর ছেড়ে দিন।”
রাত্রিটা কোনমতে ধৈর্য ধরিয়া আমরা পার করিয়া দিলাম। ভোর হইতেই সারা ক্যাম্পে সাজ-সাজ রব পড়িয়া গেল। সারারাত্র থাকিয়া থাকিয়া বৃষ্টি গিয়াছে, ভোরেও আকাশের সারা মুখ মেঘে আচ্ছন্ন। টিপ-টিপ বৃষ্টিও হইতেছিল, কিন্তু এই সামান্য বৃষ্টি বক্সা পাহাড়ে বৃষ্টি বলিয়া ধর্তব্যই নহে। খেলাটা বন্ধ হইল না।
রবিবাবু হাঁটুর উপর কাপড় তুলিয়া গোলে গিয়া দাঁড়ালেন। দাঁড়াইবার
১৫৯