ভারতের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের কাজটা পূর্বাহ্নেই সারিয়া রাখিবার জন্য প্রস্তুত হইলেন।
একটা দিন বাদ গেল, তার পরেই ইংরেজগণ মাঠে নামিয়া পড়িলেন। গান্ধীজী বোম্বে ত্যাগ করিয়াছেন ২৯শে আগষ্ট, ৩০শে আগষ্ট চট্টগ্রামে পুলিশ ইনপ্সেক্টর খান বাহাদুর আশানুল্লাকে নিজাম পল্টন ময়দানে সন্ধ্যাবেলা খেলার জনতার মধ্যে হরিপদ ভট্টাচার্য নামক ১৬ বছরের একটি ছেলে পিস্তলের গুলীতে হত্যা করে। খানবাহাদুর চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার-লুণ্ঠন মামলা তদন্তের ও তত্ত্বাবধানের চার্জে ছিলেন, বিপ্লবীর হাতে তাঁহাকে প্রাণ দিতে হইল।
জেল। ম্যাজিষ্ট্রেট ও শহরের অপরাপর ইংরেজগণ আনন্দে নাচিয়া উঠিলেন যে, এবার মুসলমান সমাজ ইহার উপযুক্ত প্রতিশোধ গ্রহণ করিবে, হিন্দু-মুসলমান বিভেদ ও বিদ্বেষ বেশ পাকা ও প্রগাঢ় হইবে এবং ফলে বিলাত হইতে ‘অর্ধনগ্ন ফকিরকে’ খালি হাতে ফিরিয়া আসিতে হইবে। কিন্তু সেদিন ও সে-রাতে চট্টগ্রামের মুসলমান সমাজের পক্ষ হইতে কোন বিক্ষোভই দেখা গেল না। তবে কি হিসাবে ভুল হইল?
বাধ্য হইয়া হিসাব ঠিক করিতে ইংরেজের গোপন হস্ত সক্রিয় হইল। গ্রামে গ্রামে নিমন্ত্রণ গেল যে, লাঠিসোঁটা লইয়া দলে দলে সকলে যেন শহরে আসে, কারণ খানবাহাদুরের শব লইয়া শোভাযাত্রা করা হইবে। পরদিন পঞ্চাশ হাজার মুসলমান জনতা শব-শোভাযাত্রার জন্য সহরে সমবেত হইল, হাতে তাদের লাঠিসোঁটা।
তারপরের সংবাদ সংক্ষিপ্ত। সিগন্যাল দেওয়া হইল— চট্টগ্রাম শহরে হিন্দুর দোকান বাড়ি-ঘর লুণ্ঠন, অগ্নিদাহ, অত্যাচার, নির্যাতন ইত্যাদিতে নরকের মুখের ঢাকনী খুলিয়া গেল। বে-সরকারী ইংরেজ, এ্যাংলো ইণ্ডিয়ান ও পুলিশবাহিনী এই দানবীয় উৎসবে বীভৎস উল্লাসের অংশ গ্রহণ করিয়াছিল। শহর হইতে মফঃস্বলেও এই নারকীয় অগ্নি বহন করিয়া লওয়া হইয়াছিল।
বক্সা ক্যাম্পে আমাদের মনের আকাশেও মেঘ জমিল, আমরা কোথায়
১৭৫