পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 “পুলিশ ক্লাবে নাকি আপনার সম্বন্ধে আলোচনা হয়েছে। সবাই নাকি বলেছে যে আপনাকে বক্‌সা যেতে হবে।”

 —“আর কারো নাম জানতে পারলেন?”

 ঠিক এই মোক্ষম সময়ে কেষ্ট চক্রবর্তী আসিয়া ঘরে প্রবেশ করিলেন। আসিয়াই কহিলেন, “উঠুন, সময় হয়ে গেছে, অফিসে ডাক পড়েছে,” বলিয়া হাতের কাগজে নামের লিষ্ট দেখাইলেন।

 শচীশ সরকার ডেক-চেয়ার ছাড়িয়া লাফাইয়া উঠিলেন, শরৎ দাস চেয়ার পরিত্যাগ করিলেন এবং কেষ্ট চক্রবর্তী এক পাক নাচিয়া লইয়া গাহিয়া উঠিলেন,—“বাঁশরী বাজিল যমুনায়, ওলো তোরা কে কে যাবি আ-য়-য়।”

 আমার সাঁওতালী ফালতু দরজার সামনে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিল। কাণ্ডকারখানা দেখিয়া শ্রীমান বোধহয় সেই যাকে বলে কিংকর্তব্যবিমূঢ়, তাই হইয়া গিয়া থাকিবে। হতভম্বের মত তাকাইরা অবশেষে হয়তো সাব্যস্ত করিয়া লইয়াছিল যে, বাবুদেব মাথা নিশ্চয় খারাপ হইয়াছে। গেটে মানে জেল-অফিসে খবর দেওয়া তার কর্তব্য কিনা, তাহাই বোধহয় এখন পর্যন্ত ঠিক করিয়া উঠিতে পারিতেছিল না।

 কেষ্ট চক্রবর্তী কহিল,—“নে ব্যাটা, পথ ছাড়, ডাক এসেছে।”

 বন্ধুদের সঙ্গে বাহির হইয়া ব্যারাকে আসিলাম। সত্য বলিলে বলিতে হয় যে, বন্ধুরা আমাকে গ্রেপ্তার করিয়া ব্যারাকে আনিয়া হাজির করিলেন।

 সেখানে বন্ধুরা অভ্যর্থনার জন্য প্রস্তুত হইয়াই ছিলেন। মাল লইয়া বাহকগণ যথাস্থানে উপস্থিত হইতেই একেবারে হুলুধ্বনি দিয়াই তাঁহারা আগন্তুককে বরণ করিয়া লইলেন।

 চীৎকার থামিলে পর কেষ্ট চক্রবর্তী হাঁকিয়া হুকুম দিলেন,—“বক্‌সার নামে একটা হুঁ দাও।”

 সঙ্গে সঙ্গে চোদ্দ-পনর জনের গলায় সমস্বরে গর্জন উঠিল—“হুঁ-উ!”

 ব্যারাকের চার চারটা দেয়াল ও মাথার উপরের ছাদটা এই গর্জনে থর থর

১০