পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ইঞ্জিন ঘরের সম্মুখে ছোটখাটো একটি ভীড়। কোন বস্তুকে কেন্দ্রে রাখিয়া ভীড়ের এই বেষ্টনী, দেখিবার জন্য দৃষ্টিটা উঁকি ঝুঁকি মারিতে লাগিল, কিন্তু ভীড়ের বহির্ভাগেই ধাক্কা খাইয়া দৃষ্টি প্রতিবারই প্রতিহত হইতেছিল।

 একবার একটু ফাঁক পাইয়া গেলাম, দৃষ্টিটা সে-পথে সোজা কেন্দ্রে গিয়া শলাকার মত যে-বস্তুটিতে বিদ্ধ হইল, তাহা একটি টুপি। ধূম হইতে অগ্নি অনুমানের ন্যায় টুপি হইতে আমাদের কমাণ্ডাণ্ট কোট্টাম সাহেবকে পাইয়া গেলাম।

 তাঁহার সম্মুখে দেখিলাম, বিরাট দেহ লইয়া বিজয় (দত্ত) ও ভূপেনবাবু (দত্ত) দণ্ডায়মান, কোট্টামের মুখের সম্মুখে বিপজ্জনকভাবে হাত নাড়িয়া উত্তেজিতভাবে বাক্য বাণ বর্ষণ করিতেছেন। আর সকলেও যে চুপ করিয়াছিলেন, তাহা নহে। কিন্তু এই দুই বক্তাই বিশেষভাবে কোট্টামকে লইয়া পড়িয়াছেন।

 সাহেবের আরদালী কালো টুপি মাথায় অদূরে দাঁড়াইয়া নাট্যের অগ্রগতি লক্ষ্য করিতেছে, সময় বুঝিলেই বাঁশী বাজাইয়া দিবে। তারপরের কাজটুকু যাহাদের উপর, তাহারাও অদূরে দুই ধারে পাহাড়ের উপর রাইফেল-হাতে প্রস্তুত হইয়া আছে।

 ভয় পাইয়া গেলাম। যে-ভাবে ইঁহারা কোট্টাম সাহেবের কৈফিয়ৎ তলব করিতেছেন, তাহা হাতাহাতিতে পরিণতি লাভ করিতে বেশী সময় লইবে বলিয়া মনে হইল না। তাহার পরে কি ঘটিতে পারে, তাহা আর অনুমান কারয়া দরকার নাই।

 ভয় পাইবার আরও একটি বিশেষ কারণ ছিল—বিজয়। আমার এই বন্ধুর একটু পরিচয় দিলেই বুঝিবেন যে, ভয় হওয়াটা উচিত কি অনুচিত।

 আপনারা জানেন যে, ডাক্তার ও ইঞ্জিনীয়ারেরা স্বভাবে একটু গুণ্ডা প্রকৃতির হইয়া থাকে। না হইয়াও উপায় নাই। মানুষের জ্যান্ত ও মরা দুই রকম শরীর

১৮১