—“এঘর ছেড়ে যেতে পারলেই ভাল হত। আবার পার্টি অনুযায়ী ঘর ভাগ করে বসেছে, কোন ঘরেই বা নেবে? কারো সঙ্গে তো আর সুবাদ রাখনি যে, অসময়ে জায়গা দেবে। ধর—”
খাটিয়া ধরিয়া কহিলাম, “কোথায় যাবি, তা তো বল্লি না?”
— “চল, ঐ কোণায় যতীন দাশের সীটের পাশে যাই, ওর মুগুর ভাঁজার রোগ নেই। শোন, এখনই একটা চিঠি পাঠিয়ে দে।”
বুঝিতে না পারিয়া কহিলাম, “চিঠি? কাকে?”
—“কমাণ্ডাণ্টকে। লিখে দে, ঘরের মধ্যে ডন বৈঠক কি? এটা তো খোট্টার খোঁয়াড় নয়, ভদ্রলোকদের থাকবার জায়গা।”
এমন সময় খোঁট্টার খোঁয়াড় মানে কম্বলের ঘর হইতে বিজয় বাহির হইয়া আসিল। সারা গায়ে ঘর্মের গঙ্গোত্রীধারা, হাতে একটা টাওয়েল।
কাছে আসিতেই জিজ্ঞাসা করিলাম, “গদা ছুড়লি কেন?”
সংক্ষিপ্ত উত্তর শুনিলাম, “ছুড়িনি, ফসকে গেছে।”
শুনিয়াই ফণী খাটিয়া ছাড়িয়া দিয়া খ্যাঁকাইয়া উঠিল, “ফসকে গেছে! এ কি গরু পেয়েছ যে, বুঝিয়ে দিলেই হোল? অন্যের মাথা তাক করে ফসকায় কেন? হাতের কাছে নিজের মাথাটা পছন্দ হয় না? ফসকে গেছে—”
বলিয়া আমাকে ধমক দিল, “ছেড়ে দিলি কেন? ধর—”
বিজয় কহিল, “এতো আর হামেশা হয় না। আজ accidentally—”
শেষ করিবার সুযোগ না দিয়া ফণী পূর্ববৎ খ্যাঁকাইয়া উঠিল, “অহো, কত দুঃখ যে, হামেশা হয় না, accidentrlly—, আজ যদি accidentally একটা accident হোত?”
বিজয় উত্তর দিল, “তাতে কি, মরতে তো একদিন হবেই।”
ফণী আনন্দে নাচিয়া উঠিল, “ওহো হো, একেবারে তপোবনের ঋষি-উবাচ, একদিন তো মরতেই হবে! এতই যদি টনটনে জ্ঞান, তবে আর ও হাঙ্গামা কেন? দড়ি দিচ্ছি, ঝুলে পড় না, আপদ যাক্।”
১৯৪