পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 কহিলাম, “মাত্র পাঁচটা নিলি কেন, মাত্র ছ’টা নেনা। বাকী কয়াটতেই আমার চলবে।”

 শুনিয়া হাসিয়া ফেলিল। বুঝিলাম রসজ্ঞান আছে। ফণী যে পাশে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিল, টের পাই নাই। বিজয় তখন দরজায় পা দিয়াছে, পিছন হইতে ফণীর গলা শোনা গেল—“চোর। তোকে জেলে দেওয়া উচিত।”

 বিজয় দরজা হইতে ফিরিয়া দাঁড়াইল, কহিল, “খাবি?”

 ফণী কিন্তু সত্যই জবাব দিল, “খাবি? ক্যান, দিয়ে জিজ্ঞেস করতে পার না?”

 বিজয় টাওয়েল হইতে একটা কমলা লইয়া ফণীকে ছুড়িয়া দিল এবং দক্ষ ক্রিকেট খেলোয়াড়ের ন্যায় কমলাটাকে ফণী ক্যাচে লুফিয়া লইল। উপেনবাবুও হাত বাড়াইয়া ছিলেন, কিন্তু পিছনে ছিলেন বলিয়া হাতটা ততদূর পর্যন্ত পৌঁছায় নাই!

 ফণী কহিল, “ছটার মধ্যে মাত্র পাঁচটা তো নিয়েছিস, উপেনকে একটা দে।”

 —“ওটাই দুজনে ভাগ করে খা,” নির্দেশ দিয়া বিজয় বারান্দা ধরিয়া অদৃশ্য হইল।

 সেদিনের মুষলপর্বটা ভালোয় ভালোয়ই শেষ হইয়াছিল, অর্থাৎ ফলপর্বে আসিয়া সমাপ্ত হইয়াছিল।

 কিন্তু সর্বত্র শেষটা এবম্প্রকার হয় না। অনেক শুভ-আরম্ভই অপঘাতে শেষ হয়, অনেক জাতকই সুতিকাগারে প্রথম ও শেষ নিঃশ্বাস দুইই টানিয়া থাকে। প্রমাণস্বরূপে একটি শোচনীয় ঘটনার উল্লেখ করিতেছি।

 আমরা হরেক রকমের লোক ছিলাম এবং হরেক রকম প্রতিভা লইয়াই পৃথিবীতে আগমন করিয়াছিলাম। অতএব আমাদের মধ্যে সাহিত্যিক থাকিবে, ইহা মোটেই বিচিত্র বা অদ্ভুত ব্যাপার বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে না। বরং সাহিত্যিকের সংখ্যাটা যেন একটু বেশীই ছিল। আর, বাঙ্গালী মাত্রেই কবি, একথা তো প্রবাদবাক্যেই দাঁড়াইয়া গিয়াছে।

১৯৬