পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ভাবী উপন্যাসের নামও সমস্বরে সমর্থিত হইয়া গেল। রাম না হইতে রামায়ণ হইয়াছিল, কাজেই আমরা নূতন বা অদ্ভুত কিছু করিলাম না। মাত্র আদি কবির পদাঙ্ক অনুসরণ করিলাম।

 সমস্যা দেখা দিল উপন্যাসের আখ্যানবস্তু লইয়া। অবশেষে আমি প্রস্তাব করিলাম যে, একটি জারজ ছেলেকে সংসারে ও সমাজে ছাড়িয়া দেওয়া হউক, দেখি অষ্টবজ্রের অষ্টাঘাতে তিনি কোন অষ্টাবক্র মূর্তি পরিগ্রহণ করেন।

 সুরপতি চক্রবর্তী উল্লাসের সহিত ঘোষণা করিলেন,—“বহুৎ আচ্ছা। আমিই ব্যাটাকে প্রথম আসরে আনয়ন করিব।”

 সুরপতিবাবুর সাহসে আমরা মুগ্ধ হইয়া গেলাম। এখানে একটি খবর দিয়া রাখি। ডেটিনিউদের মধ্যে যে কয়েকজন লেখকের লেখার সঙ্গে আমি পরিচিত, তন্মধ্যে সুরপতিবাবুর কলমটিই নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠ বলিয়া আমার মনে হইয়াছে।

 সুরপতিবাবু আরম্ভ করিবার ভার নিলেন। তাঁহার পর কে কে লিখিবেন, তাহাও সাব্যস্ত হইয়া গেল। এখন শুধু এইটুকু স্মরণে আছে যে, সপ্ত মহারথীর হাতের মার খাইয়া নায়ক যখন মুমূর্ষু অবস্থায় পরিত্যক্ত হইবেন, তখন আমি আসিয়া অষ্টম আঘাতে অর্থাৎ মড়ার উপর খাড়ার ধা দিয়া তাহাকে খতম করিব। নিজের উপর এই বিশ্বাসটুকু ছিল যে, মড়াকে চেষ্টা করিলে নিশ্চয় মারিতে পারিব

 আসর ভাঙ্গিয়া বাহিরে আসিতেই টের পাইলাম যে, খবরটা ইতিমধ্যেই ক্যাম্পে ছড়াইয়া পড়িাছে। বীরেনদা বারান্দাতেই ছিলেন, লণ্ঠন জ্বালিয়া লোহার খাটিয়াতে দাবার আসর বসিয়াছিল। আমাদিগকে দেখিয়া বীরেনদা বলিলেন, “এই যে অষ্টবজ্র।”

 আমরা খুব গোপনে আলাপ করি নাই এবং আমাদের বক্তব্য বেশ উঁচু গলাতেই আমরা আসরে পেশ করিয়াছিলাম। গোপন মন্ত্রণাটাও

১৯৮