—“আসছি।”
উত্তরটা এমন সুরে প্রদত্ত হইল যে, শাসানী মনে হইতে পারিত। যেন, “দাঁড়াও, দেখাচ্ছি” ভাবটি ঐ সংক্ষিপ্ত ‘আসছি’ শব্দটির মধ্যে তিনি ভরিয়া দিলেন।
হিড়িম্বা ডাক্তার অশ্বিনী মাস্টারের খাটের পাশে চেয়ারটা টানিয়া লইয়া উপবিষ্ট হইলেন। পরে প্রশ্ন করিলেন, “কি হয়েছে?”
—“পেটে ভয়ানক ব্যথা।”
—“ব্যথা? ব্যথা হল কেন?”
রোগী উত্তর দিলেন, “তা আমি কি করে বলব। আমি তো ডাক্তার নই।”
ডাক্তার উত্তর দিলেন, “আপনার পেটে ব্যথা, আর আপনি বলতে পারেন না কেন ব্যথা হল?”
অশ্বিনীবাবু এবার ভালো করিয়া হিড়িম্বা ডাক্তারের মুখের দিকে তাকাইয়া দেখিলেন। পরে বলিলেন, “বাজে কথা রাখুন, যদি ওষুধ কিছু দিতে পারেন দিন, নইলে উঠুন।”
হিড়িম্বা ডাক্তার সত্যই উঠিয়া দাঁড়াইলেন, বলিলেন, “আমি কি ওষুধ দেব। আপনি যদি কোন ওষুধ সাজেস্ট করতে পারেন, বলুন, আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
—“আপনি যান, আমার কোন ওষুধের দরকার নাই।”
এবার হিড়িম্বা ডাক্তার বুদ্ধিমানের মত উত্তর দিলেন, “না খেয়ে আছেন, তাই পেটে ব্যথা হয়েছে। খাওয়া আরম্ভ করলেই সেরে যাবে।”
হিড়িম্বা যে অদ্ভুত, এটুকু এই প্রথম পরিচয়েই জানা গেল, কিন্তু তাঁহার আসল প্রকৃতিটি যে কি, জানিবার জন্য আরও একটু অপেক্ষা করিতে হইয়াছিল।
পরদিন উপেন দাস হর্ষকে ডাকিলেন, “শুনুন তো।”
শুনিবার জন্য হর্ষ ডাক্তার নিঃশব্দে আগাইয়া আসিলেন।
২০৩