কহিলাম,—“এতে ভয়ের কি হোল?”
—“যেভাবে বল্লেন, শুনলে বুঝতেন। ডেপুটিবাবুও সিপাইকে বল্লেন, হাঁ, আগে ওখানটায় সেরে তারপর যাকে খুশী কামাওগে বাপু! শুনলে বুঝতেন।”
না শুনিয়াও বুঝিলাম। কারণ, এ সব ক্ষেত্রে বুঝিবার আবশ্যক পর্যন্ত করে না, বিশ্বাস করিলেই হইল। তাছাড়া, আমাকেই যখন ভয় করেন, তখন বিশ্বাস না করা আমার পক্ষে ভালো দেখায় না। আর যেই বলুক, যার জন্য চুরি, অন্ততঃ তার কখনও চোর বলা উচিৎ নহে। তাহা হইলে সমাজে ধর্ম বলিয়া কোন কিছুই যে থাকে না।
ভয় করিবার জন্য জেলারবাবুদের যে নিজেদের বিশেষ কোন বাহাদুরি বা কৃতিত্ব আছে, আমি তা মোটেই মনে করি না। কারণ, ভয় বস্তুটি কারো বা কোন গোষ্ঠীর অথবা কোন বিশেষ সমাজের নিজস্ব একচেটিয়া সম্পত্তি নহে। ওতে সবারই সমান অধিকার বা ভোগ দখল রহিয়াছে। আমি তো তাই মনে করিয়া থাকি।
আচ্ছা, ভয় জিনিসটা আসলে কি বস্তু? ইহাকে মনের একটি আদিমতম বৃত্তি বলিলে দোষ হয় কি? এক কথায় ইহাকে মনের সহজাত স্বভাব বলিতে কোন বাধা আছে কি? ভয়কে যদি মনের স্বভাব অথবা ধর্ম বলিয়া গ্রহণ করা যায়, তবে ইহাকে বৃত্তি আখ্যা দেওয়া মোটেই অযৌক্তিক হইবে না। জীবন-বৃত্তের মধ্যে যে বৃত্তিটি দ্বারা জীব ধৃত, অথবা যে বৃত্তির জন্য জীবন পরিধির মধ্যেই জীব বিচরণ করিতে বাধ্য, তাহাকেই ভয় বলিয়া সংজ্ঞা দেওয়াতে তখন আর বাধা থাকে না এবং তখন সকল জীবেরই ভয় নামক বস্তুটি সাধারণ ধর্ম ও স্বভাব বলিয়াই স্বীকৃত হইবে।
যাক, এত কথার আবশ্যক নাই। আমি সোজা বুঝিয়া লইয়াছি যে, ভয় মানে আসলে মৃত্যু ভয় এবং প্রাণী মাত্রেই এই জন্যই একদিক দিয়া ভীতু। বহু প্রতিভাবান, জ্ঞানী ও কর্মীকে জীবনে দেখিবার সুযোগ আমারও হইয়াছে। তাঁরা সমাজের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, তাহাও আমি মানিয়া থাকি। কিন্তু
১৩