পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 তারপর আমাদের দিকে ফিরিয়া কহিলেন, “টোমরা টৈয়ার ঠাকে, টোম্বাকটো যেটে হোবে।”

 আমাদের চোখমুখের ভাব দেখিয়া বীরেনদা বুঝিলেন যে, তাঁহার ‘টোম্বাকটো’ আমাদের মালুম হইতেছে না। তিনি চটিয়া গেলেন, তাঁহার সাহেবী উচ্চারণ খসিয়া খাস বাঙ্গালী বুলি জিভ হইতে বহির্গত হইল।

 কহিলেন, গোপেশ্বরের (আশু মুখার্জি) গোয়ালের যত গরু, কিছুই শেখনি দেখছি। এই জংলী, জিওগ্রাফিটা একটু নাড়াচাড়া কোর, টোম্বাকটো হোল একটা দ্বীপ, বুঝলে মূর্খ।”

 আমরা সংবাদে যথারীতি ভীত হইলাম। সৌরভ ঘোষ বলিলেন, “দোহাই আপনার, দ্বীপান্তরে পাঠাবেন না, তা হলে পেরাণ নিয়ে ফিরতে পারব না।”

 বীরেনদা আশ্বাস দিলেন, “ভয় নেই, ফিরবার প্রয়োজন হবে না। ওখানেই পেরাণ নিয়ে ঘরবাড়ী বেঁধে স্থায়ী বাসিন্দা হোতে পারবে, সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।”

 দিনকতক পরে এমনই এক দুপুরের ব্যাপার, অফিস হইতে পত্রিকা আসিয়া গিয়াছে কিন্তু তখন পর্যন্ত ঘরে ঘরে বিলি করা হয় নাই। বীরেনদা একটা ‘ষ্টেটসম্যান’ পত্রিকা টান দিয়া তুলিয়া লইলেন।

 কিছুক্ষণ পরেই তিনি সোল্লাসে চীৎকার করিয়া উঠিলেন, “জয় মা বিশালাক্ষী, ফাঁড়া কেটে গেছে।”

 কিরণদা (মুখার্জি) বারান্দা ধরিয়া খোঁড়াইয়া খোঁড়াইয়া আগাইতেছিলেন। বলিলেন, “এই শূয়োর, এত আনন্দ কিসের?”

 কিরণদা ছোটবড় সকলকেই উক্তপ্রকার মধুর সম্বোধন করিয়া থাকেন। বীরেনদা জবাব দিলেন, “টোম্বাকটো যেতে হবে না, বেঁচে গেলেন।”

 তারপর ঘোষণা করিলেন, “রাজপুতনার মরুভূমিতে ব্যবস্থা হচ্ছে। মিঃ ফিনী খোঁয়াড়ের স্থান নির্বাচনে বেরিয়েছে। নেও, চেঁচিয়ে পড়ে শুনাও,”

২১৮