—“ব্যাকরণের জ্ঞান যে লোপ করে দিল দেখছি।” আমাদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে শিক্ষিত সেই সন্তোষ গাঙ্গুলীরই গলা।
জিজ্ঞাস্য মুখে চাইতেই তিনি জবাব দিয়াছিলেন—
—“ভেদ বুঝতে পারেন, কে পুরুষ আর কে মেয়ে মানুষ?”
আমার ঠোঁট একটু ফাঁক হইয়া গেল, না হাসিয়া পারি নাই।
সন্তোষবাবু কহিলেন,—“দেখছেন না, বুক বলে কোন আপদ-বালাই নেই, সব সমান।”
দেখিয়াছিলাম বই কি! দেখিয়াই তো এতক্ষণ হাঁ করিয়াছিলাম। দেখা যখন আরও অভ্যাস হইয়াছিল, তখন আর থ’ খাইতাম না। লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছি যে, পাহাড়ী দেশের মেয়েদের দেহে প্রায় ক্ষেত্রেই এ ত্রুটি থাকে। উত্তমাঙ্গের দিকে যে-কোন কারণেই হউক ইহারা বিধাতার মার খাইয়াছে। কিন্তু অধমাঙ্গের দিকে এ ত্রুটি ভগবান বড় বেশী করিয়াই সংশোধন করিয়া দিয়াছেন। উরুর যে আভাস পাইলাম, তাতে দমিয়া গেলাম। দুর্যোধনের উরু ভাঙ্গিয়া ভীম বাহাদুর হইয়াছেন। তিনি যে কত বড় বীর এবং তাঁর গদার জোর, যে কত, পাইলে একবার এখন পরীক্ষা করা যাইত।
এই সময়ে কেষ্টবাবুর গলা শুনিয়াছিলাম— “জয়মা মহিষমর্দিনী!”
ফিরিয়া দেখিলাম, সত্যই তিনি কপালে হাত ঠেকাইয়া প্রণাম নিবেদন করিতেছেন। প্রণম্যটিকে দেখিয়া আমারও মন জয়ধ্বনি না করিয়া পারে নাই —মহিষমর্দিনীই বটে! প্রায় আড়াই মণ তিন মণ ওজনের মাল কাঁধে লইয়া মহিষমর্দিনী দাঁড়াইয়াছে এবং ছ-সাত মাইল পাহাড়ী পথ পার হইয়া এ মাল পাহাড়ের মাথায় বক্সা দুর্গে পৌঁছাইয়া দিয়া তবে ভারমুক্ত হইবে। অধমাঙ্গের শক্তি ও পুষ্টি কি স্তরের হইলে ইহা সম্ভব হয়, তাহা আপনাদিগকে অনুমান করিয়া লইতে হইবে। বৃটিশ ললনাদেরও পাদ ও নিতম্বগর্ব এই ভূটিয়া মহিষমর্দিনীরা মর্দিত করিয়া ছাড়িয়াছে। এই জয়ের গর্বে আমরাও গর্বিত বোধ করিলাম।
২৯