পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 তাই কাঁধে চড়ার প্রস্তাবটায় কান না দিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম—“হেঁটে যেতে হবে কেন? শুনেছিলাম যে, ঘোড়া ডাণ্ডী এসবের বন্দোবস্ত থাকে?”

 —“তা থাকে,” বলিয়া শরৎবাবু তুষ্ণীম্ভাব অবলম্বন করিলেন।

 শরৎবাবুর সঙ্গে কিছুক্ষণ এইভাবে ধ্বস্তাধ্বস্তি করার পর ব্যাপারটা বুঝিতে পারিলাম। ঘোড়া আসিয়াছে মাত্র ছয়টি, ডাণ্ডী আসে নাই একখানাও, এদিকে লোক আনিয়া নামানো হইয়াছে চৌদ্দ জন। আমরা সিউড়ির নবরত্ন, আর বগুড়া ও রংপুর হইতে পাঁচজন—সংখ্যাটা চৌদ্দই হয়।

 শাস্ত্রে আছে, বুদ্ধি যার বল তার। আর বুদ্ধিটা যার যার নিজ মাথার মধ্যেই রহিয়াছে। বুদ্ধির শরণ নিলাম এবং পরামর্শও পাইয়া গেলাম।

 কহিলাম—“এতে এত ভাবার কি আছে?”

 শরৎবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন—“এতেও আপনি ভাবতে নিষেধ করছেন? বেশ, কখন আপনি ভাবতে বলেন?”

 হাসি চাপিয়া কহিলাম—“সময় হলেই বুঝতে পারবেন, ভাবতে বলার পরামর্শের দরকার হবে না।”

 —“কথা কাটাকাটি করার ইচ্ছে আমার নেই, বেশ, আপনার কথাই মেনে নিলাম। এখন আপনি কি করতে বলেন শুনি?”

 শুনিতে যখন চাহিতেছেন, শুনাইয়া দিলাম। বলিলাম—“ছয়টা ঘোড়া আছে, ছ’জন চলে যাক। তারা গিয়ে বাকী আটজনের মত ঘোড়া ডাণ্ডী পাঠিয়ে দিতে বলুক।”

 —“এইতো? না, আরও কিছু পরামর্শ আছে?”

 ঘাবড়াইয়া গেলাম, কহিলাম—“না, আপাততঃ এর বেশি অন্য কোন পরামর্শ আমার নেই।”

 —“বেশ তবে শুনুন এবার। ছজন যেতেও পারে, গিয়ে ওকথা বলতেও পারে। কিন্তু ঘোড়া ডাণ্ডী আজ আর আসবে না। রাতটা এখানেই কাটাতে হবে।”

৩৬