কহিলাম,—“কেউ আর এখন ঘোড়ায় যাবে না, আপনিই এটা বাকীটুকু ব্যবহার করুন।”
—“যাবেন না? আচ্ছা। এটাকে খালি পিঠে যেতে দিয়ে লাভ নেই,” বলিয়া লাফ দিয়া ঘোড়ায় চাপিলেন এবং ঘোড়। হাঁকাইয়া আগাইয়া গেলেন।
শরৎবাবুকে জিজ্ঞাসা করিলাম,—“ব্যাপার কি?”
—“কিসের?”
—“পায়ে হেঁটে আসছেন, তবু ঘোড়া ছুঁলেন না যে ওঁরা?”
শরৎবাবু কহিলেন—“কে জানে?”
বুঝিলাম, শরৎবাবুর আবার শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়াছে।
কহিলাম,—“আমি জানি।”
এ রকম উত্তর বোধ হয় তিনি আশা করেন নাই, তাই ঘাড় ফিরাইয়া আমার দিকে তাকাইলেন, তারপর জিজ্ঞাসা করিলেন,—“কি জানেন?”
গম্ভীর হইয়া কহিলাম,—“বাল্য শিক্ষা পড়েননি?”
—“পড়িনি? কি যে বলেন। পিসিমার কাছে শুনেছি যে, এক বছরে তেরখানা বাল্যশিক্ষা ছিঁড়েছি।”
হাসিয়া ফেলিলাম, “বলেন কি, এতই?
—“তবে না তো কি—” বলিয়া কৈশোর-পাণ্ডিত্যে গর্বিত বোধ করিলেন।
তারপর প্রশ্ন করিলেন—“বাল্য-শিক্ষার কথা কি বলছিলেন?”
—“পড়েননি, ‘ঘোড়ায় চড়িল আছাড় খাইল,’ কিন্তু ইহারা আবার চড়িল না।”
শরৎবাবু হো করিয়া হাসিয়া উঠিলেন, বোধ হয় দৃশ্যটা কল্পনায় দেখিয়া অতীব মজা ও হাসির ব্যাপার বলিয়া তাঁর প্রতীতি হইয়া থাকিবে।
আমি বাল্যশিক্ষায় যাহা জানিয়াছিলাম এবং শরৎবাবু কল্পনার যাহা দেখিয়াছিলেন, তাহ। বস্তুতঃই ঘটিয়াছিল। তবে আমাদের ক্ষেত্রে নয়, আগের
৫৬