দিন যে দল গিয়াছে, তাদের একজনের অভিজ্ঞতা এবম্প্রকারই হইয়াছিল। কাম্পে পৌঁছিয়া শুনিয়াছিলাম।
ভদ্রলোকের নাম বীরেন দাশগুপ্ত। দৈর্ঘ্যে কম, প্রস্থে অধিক, তদুপরি জেলের খাওয়া খাইয়া আরও মেদপুষ্ট হইয়াছিলেন। বক্সাস্টেশনে থামিয়া তিনি একটা ঘোড়া দখল করেন।
বন্ধুদের বলিলেন,—“এটা আমার ঘোড়া, কেউ যেন আবার নিয়ে সরে না পড়ে। এই চিহ্ন দিয়ে রাখলাম। যে নেবে তার দিব্যি —” বলিয়া জামার বুক পকেট হইতে রুমাল বাহির করিয়া ঘোড়াটার ঘাড়ে লাগামের সঙ্গে বাঁধিয়া দিলেন।
কে একজন জিজ্ঞাসা করিলেন,—“আপনি যাচ্ছেন কোথায়?”
—“আসছি,” বলিয়া প্রকৃতির আহ্বানে সাড়া দিতে একটু দূরে গেলেন। পরে ভারমুক্ত হইয়া ফিরিয়া আসিয়া দেখিলেন যে, ঘোড়া ঠিক আছে, বে-দখল হয় নাই।
কহিলেন,—“না, তোমরা দেখছি সবাই ভদ্রলোক, সুযোগ পেয়েও পরস্বে হাত দেও না। হাসছ যে?”
—“আপনি ঘোড়ায় চড়বেন—”
চটিয়া ধীরেনবাবু উত্তর দিলেন,—“এতে হাসির কি হল? আমি ঘোড়ায় না চেপে ঘোড়াটা আমার উপর চাপবে ভেবেছিলে না কি?”
—“আমরা তো সেই আশাতেই আছি”
বীরেনবাবু কহিলেন,—“বৃথা আশা তোমাদের। জান, আমার ঠাকুর্দা ঘোড়ায় চড়ে রোগী দেখতে যেতেন? আমি তাঁরই পৌত্র।”
অশ্বারোঙ্গণের উপযুক্ত সজ্জা করিয়া তিনি প্রস্তুত হইলেন। কিন্তু একা নিজের চেষ্টায় তিনি ঘোড়াটার পিঠে উঠিয়া বসিতে পারিতেছিলেন না।
বলিলেন,—“দাঁড়িয়ে দাঁত বার করে হাসছ কেন? একটু সাহায্য কর না।”
৫৭